বিশেষত যদি গ্রহীতার সঙ্গে দাতার কোনো কারণে সম্পর্ক নষ্ট হয় বা মতপার্থক্য দেখা দেয়, তখন অতীতের উপকারের ফিরিস্তি খুলে দিয়ে খোঁটা দিতে শুরু করে।
কাউকে সহযোগিতা কিংবা উপকার করে খোঁটা দেওয়া ইসলামে নিকৃষ্ট অপরাধ।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, যারা স্বীয় ধন সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে, এরপর ব্যয় করার পর সে অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে না এবং কষ্টও দেয় না, তাদেরই জন্যে তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে পুরস্কার এবং তাদের কোনো আশঙ্কা নেই, তারা চিন্তিতও হবে না। (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৬২)
আল্লাহ তাআলা আরো ইরশাদ করেন, হে ঈমানদারগণ! তোমরা অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে এবং কষ্ট দিয়ে নিজেদের দান-বদান্যতা বরবাদ করো না সে ব্যক্তির মতো, যে নিজের ধন-সম্পদ লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে ব্যয় করে এবং আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে না। (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৬৪)
মূলত যারা সংকীর্ণমনা তারাই উপকার করে অপরকে খোঁটা দেয়। আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন তাদের সাথে কথা বলবেন না বলে হাদিসে এসেছে।
আবু যর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, তিন শ্রেণীর লোকের সঙ্গে আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন কথা বলবেন না। খোঁটাদানকারী; সে যা কিছু দান সদকা করে পরক্ষণেই তার খোঁটা দেয়। আর যে ব্যক্তি মিথ্যা শপথ করে তার পণ্য বিক্রি করে এবং যে ব্যক্তি টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে চলে বা পরিধান করে। (মুসলিম, হাদিস নং: ২০২)
মুসলিম শরিফের আরেকটি হাদিসে আছে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তিন শ্রেণীর লোকের সঙ্গে কথা বলবেন না। তাদের দিকে তাকাবেন না এবং তাদের পাপমুক্ত করবেন না। তাদের জন্য রয়েছে পীড়াদায়ক শাস্তি। এই তিনজন হচ্ছে, পায়ের গিরার নিচে ঝুলিয়ে কাপড় পরিধানকারী, অনুগ্রহ ও দান-দক্ষিণার পর খোঁটাদাতা ও প্রচারকারী এবং মিথ্যা শপথ করে পণ্যসামগ্রী বিক্রয়কারী।
অন্য হাদিসে আছে, তিনজন বেহেশতে যেতে পারবে না। তারা হচ্ছে মাতাপিতার অবাধ্য সন্তান, মাদকসেবী, উপকার ও দানদক্ষিণার প্রচার ও খোঁটাদাতা। (নাসায়ি শরিফ)
তাই কাউকে উপকার করতে চাইলে, নিঃস্বার্থভাবেই করবো। উপকার করে খোঁটা দিতে যাবো না। নিজের ব্যক্তিত্ব ছোট করার পাশাপাশি উপকারের সওয়াব নষ্ট করবো না। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।
বাংলানিউজের ইসলাম বিভাগে আপনিও লেখা পাঠাতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ২১১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯,২০১৮
এমএমইউ/এমএ