ব্রিটেনের বিভিন্ন ঐতিহাসিক, রাজনীতিবিদ ও সাধারণ জনগণের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে কাজ করা ভারতীয় নারী সৈনিক নুর এনায়েত খানের ছবি ছাপানোর এ চিন্তা করছে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২০ সাল নাগাদ নুর এনায়েতের ছবিযুক্ত মুদ্রা ব্রিটেনের বাজারে ছাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নুর ইনায়েত খানের মা আমেরিকান ও বাবা ভারতীয়। তিনি ১৯১৪ সালে রাশিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বেড়ে ওঠেন ফ্রান্সে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় পরিবারসহ নুর ইনায়েত লন্ডনে চলে আসেন। কিছুদিন পর আবার ফ্রান্সে ফিরে যান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আগ পর্যন্ত তিনি কবিতা ও শিশুতোষ গল্প লেখায় ব্যস্ত থাকেন এবং ১৯৪০ সালে ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীতে যোগদান করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নুর: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে নুর ও তার ভাই বেলায়েত মিত্র শক্তিকে সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নেন। তখন ফ্রান্স ছিল মিত্রশক্তির অন্তর্ভুক্ত। দেশ থেকে নাৎসিদের বিতাড়নে ভূমিকা রাখতে পারলে ইংলিশ ও ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে সুসম্পর্ক সৃষ্টি হবে ভেবেই তারা এগুতে থাকেন।
সে লক্ষ্যে ১৯৪৩ সালে তিনি উইমেন’স অক্সিলিয়ারি এয়ার ফোর্সে যোগ দেন। ওয়্যারলেস অপারেটর হিসেবে সেখানে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় নুরকে। খুব দ্রুত কাজে দক্ষতা দেখিয়ে তিনি স্পেশাল অপারেশন এক্সিকিউটিভ (ফ্রান্স) শাখায় গুপ্তচর হিসেবে নিয়োগ পান।
গুপ্তবার্তা পাঠাতেন যেভাবে: নুর অত্যন্ত ভদ্র নম্র-প্রকৃতির ছিলেন। নুরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাই ধারণা করেছিলেন, গুপ্তচর হিসেবে নুর ভালো সফলতা পাবে না। কিন্তু তিনি তার যোগ্যতা ও দক্ষতা দিয়ে দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। নাৎসি অধ্যুষিত প্যারিসে ওয়্যারলেস অপারেটররা যখন একের পর এক গ্রেফতার হওয়া সত্ত্বেও নুর স্বাভাবিকভাবে জার্মানদের সঙ্গে মিশে প্রতি মুহূর্তে লন্ডনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন এবং গুপ্তবার্তা পাঠাতেন। জার্মানদের সঙ্গে নুর এমনভাবে সম্পর্ক তৈরি করেছিলেন যে তারা কখনো ভাবতেও পারেনি তাদের সব কার্যক্রম একজন গুপ্তচর পর্যবেক্ষণ করছে।
নুরের সাহসিকতা ও অবদান সম্পর্কে ব্রিটিশ পরিবহনমন্ত্রী নুসরাত গনি বলেন, এটি বিস্ময়কর ও অভাবনীয় গল্প। তার সম্পর্কে আপনি যতো জানবেন, ততো বুঝতে পারবেন তিনি কতটা নির্ভীক ও সাহসী ছিলেন।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে ই-মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৮
এমএমইউ/এসএইচ