১৩৪৯ বঙ্গাব্দ ১২ জৈষ্ঠ্য তৎকালীন ধনাঢ্য ও ধর্মনুরাগী মো. হাফিজ উদ্দিন মসজিদটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। চল্লিশের দশকের শুরুর দিকে সোহাতা গ্রামে ছোট্ট একটি মসজিদ ছিল।
প্রাকপ্রস্তুতি হিসেবে তিনি মসজিদের স্থান নির্ধারণ করেন এবং ইট তৈরির জন্য ইটভাটা নির্মাণ করেন। কিন্তু মসজিদ নিমার্ণের উপযোগী ইট প্রস্তুত করতে পারেননি। কারণ, গাছ দিয়ে পোড়ানো ইট নির্মাণ ভবনের জন্য মানসম্মত হয়নি।
তাই পরবর্তীতে কয়লা সংগ্রহের উদ্দেশ্যে মো. হাফিজ উদ্দিন ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলওয়ের তৎকালীন কয়লাবাহী ট্রেন চালকের কাছে মসজিদ নির্মাণের ইচ্ছার কথা জানিয়ে ইট পোড়ানোর জন্য কয়লার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
ট্রেনচালক তার সিনিয়র কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে যৎসামান্য মূল্যে তাকে এক ওয়াগন কয়লা দেন। ফলে এগুলো দিয়ে মো. হাফিজ উদ্দিন প্রায় দুই লাখের বেশি ইট তৈরি করেন। মসজিদ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় এক লাখ ইট রেখে বাকি ইট তিনি কুমিল্লার এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন। ইট বিক্রির ওই টাকায় মসজিদ নির্মাণের ব্যয়ের অনেকটাই ব্যবস্থা হয়েছিল।
মসজিদটি নির্মাণের পুরো ব্যয়ভার বহন করেন মো. হাফিজ উদ্দিন। মসজিদের কল্যাণে ব্যয়ের কাজে সহায়ক হওয়ার জন্য তিনি মসজিদের নামে ৩৬০ শতাংশ জমিও দান করেন।
আধুনিককালে প্রাচীন স্থাপত্যের অনুকরণে নির্মিত এই মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৫৪ ফুট ও প্রস্থ ২৪ ফুট। মসজিদটির দেয়াল ৩ ফুটেরও বেশি পুরো। এর নির্মাণ কাজে ইট, চুন, সুরকি ও লোহার পাটাতন ব্যবহার করা হয়েছে।
মসজিদটিতে ৩টি গম্বুজ ও ১২টি মিনার রয়েছে। মাঝখানের গম্বুজটি অন্য দুইটির চেয়ে আকারে বড়। মসজিদটির মূল প্রবেশপথ একটি এবং ভেতরে আরো তিনটি দরজা ও দু’টি জানালা রয়েছে।
সুরম্য নকশা ও কারুকার্য খচিত মসজিদটি নির্মাণে সময় লেগেছিলো চার বছর। নকশা আঁকা ও অন্যান্য যাবতীয় কাজ করেন পুরান ঢাকার তৎকালীন স্বনামধন্য প্রকৌশলী মো. আবদুস ছাত্তার ও তার শ্যালক।
মসজিদ আল্লাহর ঘর বিধায়, প্রতিষ্ঠাতা মসজিদের কোনো নামকরণ করেননি। পরবর্তীতে তিন গম্বুজ মসজিদ বা সোহাতা মসজিদ এলাকায় পরিচিতি লাভ করে।
মো. মোশারফ হোসেন, নির্বাহী, জেসপার গ্রুপ (বাণিজ্য ও অর্থ)
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১০৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৮
এমএমইউ/জেডএস