ঢাকা, রবিবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মিরপুরে ফুটপাতে ময়লার ডিপো, দুর্ভোগ চরমে

মহিউদ্দিন মাহমুদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৬
মিরপুরে ফুটপাতে ময়লার ডিপো, দুর্ভোগ চরমে ছবি- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর

সিটি করপোরেশনের ময়লার ডিপো, স্থায়ী ও অস্থায়ী দোকানের পাশাপাশি বহুতল মার্কেট মিরপুর-১ নম্বরের ফুটপাতগুলো পুরোপরি দখল করে রেখেছে। এতে পথচারীদের ঝুঁকি নিয়ে সড়ক ও আইল্যান্ড দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

ঢাকা: সিটি করপোরেশনের ময়লার ডিপো, স্থায়ী ও অস্থায়ী দোকানের পাশাপাশি বহুতল মার্কেট মিরপুর-১ নম্বরের ফুটপাতগুলো পুরোপরি দখল করে রেখেছে। এতে পথচারীদের ঝুঁকি নিয়ে সড়ক ও আইল্যান্ড দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

এসব কারণে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছালেও যেন দেখার কেউ নেই।
 
শুক্রবার (১১ নভেম্বর) সকালে মিরপুর-১ নম্বর গোলচক্কর থেকে শাহ আলী মাজার পর্যন্ত সরেজমিন দেখা যায়, ফুটপাত থেকে মাঝ রাস্তা পর্যন্ত অবৈধ দখলে। পথচারীরা রিকশা ও গাড়ির ফাঁকফোঁকর গলিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।
 
ভোরের আলো না ফুটতেই শুরু হয় দুর্ভোগ। সকালে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষগুলোকে ময়লার ডিপোর পচা ও দুর্গন্ধের সঙ্গে বাড়তি ঝুঁকি ও দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হয়।
 
মধ্য রাতের পর শুরু হয় মিরপুর-১ নম্বর পাইকারি কাঁচাবাজারে বেচাকেনা। চলে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দশটা পর্যন্ত। ছুটির দিনে কখনো কখনো তা চলে বেলা ১১টা পর্যন্ত।
 
দেখা যায়, ফুটপাত থেকে শুরু করে মাঝ রাস্তায় যান চলাচলের জন্য সামান্য একটু জায়গা রেখে বিভিন্ন শাক-সবজি পসরা বসান পাইকাররা। মিরপুর-১ নম্বর পাইকারি কাঁচাবাজারের জন্য দিয়াবাড়ি বেড়িবাঁধ এলাকায় নির্ধারিত জায়গা রয়েছে। তবু পাইকাররা রাস্তা দখল করে এখানে বাজার বসান।
 
সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ মোস্তফা বাংলানিউজকে বলেন, দিয়াবাড়ির মাঠে হাট বসলে আমাদের জন্য সুবিধা। কিন্তু সেখানে কেউ যাচ্ছে না। এখানে ব্যবসা করতে হলে বিক্রির ওপর নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিতে হয়।
 
ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় প্রভাবশালীরা কাঁচা বাজারের পণ্য বিক্রির জন্য পাইকারদের কাছে পজিশন বিক্রি করেন। সরকারি রাস্তায় প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ আয় অব্যাহত রাখতে কাঁচা বাজার এখানে রাখতে আগ্রহী অনেকে।
 
এদিকে সকালের পাইকারি বাজার শেষ হলেও দুর্ভোগ পিছু ছাড়ে না পথচারীদের। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষের ভীড়ের পাশাপাশি এখানকার ফুটপাতগুলোতে হকারদের স্থায়ী দোকানের পাশাপাশি জড়ো হতে থাকেন ভাসমান হকাররা।
 
বহুতল মার্কেটগুলোও সরু ফুটপাত দখলে ভাগ বসিয়েছেন। অনেকে অবৈধভাবে দখল করে স্থায়ী দোকান বানিয়েছেন পথচারীদের চলাচলের রাস্তায়।
 
মুক্তিযোদ্ধা সুপার মার্কেটের সামনে ফুটপাত দখল করে ফলের দোকান দিয়েছেন সোহেল। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, হকারদের জন্য আলাদা জায়গা করে দিলে আমরা সেখানে চলে যেতাম। মানুষেরও চলাচলে অসুবিধা হতো না।  

অবৈধভাবে ফুটপাত দখলে কেউ কোনো ঝামেলা করে কি-না জানতে চাইলে সোহেল বলেন, মাঝে মধ্যে পুলিশ, সিটি করপোরেশনের লোকজন আসে। আবার সব ঠিকঠাক হয়ে যায়।

ফুটপাত দখলেও চলে অবৈধ লেনদেন
 
মিরপুর-১ নম্বর গোলচক্কর থেকে শাহ আলী মার্কেট পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে ফুটপাতের ৯০ শতাংশেরও বেশি অবৈধ দখলে চলে গেছে। এখানকার ফুটপাতগুলো পথচারী চলাচলের জন্য একেবারেই অযোগ্য। সারাদিনই দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয় পথচারীদের।
 
মিরপুর-১ নম্বর আনসার ক্যাম্প এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, অফিস ও গার্মেন্টস ছুটির সময় বেশিরভাগ দিনই ফুটওভার ব্রিজ ও ফুটপাতগুলোতে পথচারীদের জট লেগে যায়। এতো বেশি ভীড়ে পড়তে হয় আপনি ডানে-বামে, সামনে-পেছনে কোনো দিকেই সরতে পারবেন না।

তিনি বলেন, রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম লাগলে যে রকম হয় সেরকম জ্যাম লেগে যায়। বেশিরভাগ মানুষই ফুটপাথ ছেড়ে রাস্তায় চলাচল করেন, সেখানেও হাঁটা যায় না।
 
গার্মেন্টস কর্মী আলফাতুন নেসা বলেন, এ রাস্তায় হাঁটা অনেক কষ্টের। অনেক সময় রাস্তায় চলতে গিয়ে রিকশা-গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খেতে হয়। ভীড়ে অনেক সময় অরুচিকর, বিকৃত আচরণেরও শিকার হতে হয়। দুর্ঘটনাও হয় হরহামেশা।
 
মিরপুর-১ নম্বরের কাঁচা বাজার সরিয়ে নেওয়া এবং ফুটপাত ময়লার ডিপো ও অবৈধ দখলমুক্ত করার বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের সঙ্গে কথা বলতে ফোনে চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৬
এমইউএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ