ঢাকা, শনিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

হলুদ চাষে ভাগ্য বদল গাংনীর কৃষকদের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৬
হলুদ চাষে ভাগ্য বদল গাংনীর কৃষকদের ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

আগের মৌসুমী নানান ফসলের চাষ করতেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কৃষকরা। কিন্তু আবাদ শেষে মুনাফা নিয়ে চিন্তায় থাকতে হতো তাদের।

মেহেরপুর: আগের মৌসুমী নানান ফসলের চাষ করতেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কৃষকরা। কিন্তু আবাদ শেষে মুনাফা নিয়ে চিন্তায় থাকতে হতো তাদের।

এখন দিন বদলেছে এ এলাকার কৃষকদের, সেইসঙ্গে ভাগ্যও। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে হলুদ চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন তারা।

এতে করে অল্প সময়ে উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের হোগলবাড়ীয়া, মটমুড়া, আকুবপুর, মহাম্মদপুরসহ এলাকার কয়েকটি গ্রামের সমতল ও উঁচু জমিতে চাষ বাড়ছে হলুদের।

পলি দোঁয়াশ ও বেলে দোঁয়াশ প্রকৃতির উর্বর মাটি হওয়ায় এসব এলাকার রাস্তার দুই ধারে, ঢালু জমিতে ও বাড়ির আশপ‍াশে করা হয়েছে হলুদের খেত।

হলুদ চাষে ভালো মুনাফা হওয়ায় দেখাদেখি এসব গ্রামের প্রায় সব বাসিন্দারাই হলুদের চাষ করেছেন।

গ্রামের বাসিন্দারা জানান, হলুদ চাষ লাভজনক হওয়ায় স্বাধীনতার পর থেকে এসব এলাকায় হলুদের চাষ শুরু হয়। কিন্তু বর্তমানে প্রায় সবাই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে হলুদের আবাস করছেন।

হোগলবাড়ীয়া গ্রামের হলুদ চাষি জমির উদ্দীন, মসলেম আলী, আমির আলী জানান, হলুদ চাষে বিঘাপ্রতি ২০/২৫ হাজার টাকা খরচ হয় তাদের। বিঘাপ্রতি ফলন পান ৯০ থেকে ১০০ মণ। এ থেকে প্রায় ৮০/৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত আসে। ফলে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা মুনাফা থাকে কৃষকের।

হোগলবাড়ীয়া মাঠপাড়ার চাষি সাহেব আলী, আমির আলী, মাহাতাব আলী, হাজী সামসুল আরেফীন জানান, হলুদ চাষ খুব লাভজনক। বছরের বৈশাখ মাসের দিকে জমিতে হলুদ রোপণ করা হয়। বছরের শেষ দিকে মাঘ-ফাল্গুন মাসে জমি থেকে হলুদ তোলা হয়।

তারা জানান, এ এলাকায় দখিনা জাতের হলুদ চাষ হয়। কাঁচা অবস্থায় প্রতিমণ হলুদ সাতশ থেকে এক হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়ে থাকে। তবে চাহিদা বাড়লে শুকনো হলুদ প্রতিমণ ৫/৬ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে।

হলুদ চাষে রাসায়নিক সার বেশি প্রয়োজন হয়। পটাশ ও ফসফেট সারের পাশাপাশি সেচ বেশি দিলে ফলন ভাল হয়।   তবে হলুদ খেতে পাতা শুকানো রোগ দেখা যায়। এই রোগ প্রতিরোধে বোরন ব্যবহার করা হয়। এছাড়া জমিতে নোনা দেখা দিলে জিপসাম সার প্রয়োগ করা হয়।
 
চাষিরা জানায়, জমি থেকে হলুদ তোলা শেষে স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, ফড়িয়া ও পাবনা থেকে আসা হলুদ ব্যবসায়ীরা কাঁচা হলুদ কিনে নেন।

তাদের অভিযোগ, বর্তম‍ানে এসব এলাকায় হলুদের চাষ বাড়তে থাকলেও কৃষকরা স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে কোনো পরামর্শমূলক সহায়তা পান না।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি অফিসার এসএম মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, হলুদ চাষিদের উদ্ধুব্ধ করতে মাঠ দিবস করা হয়েছে।

তিনি জানান, এ বছর জেলায় ২০০ হেক্টর জমিতে হলুদের চাষ হয়েছে। তবে গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে প্রায় ৮০ হেক্টর জমিতে হলুদ চাষ হয়েছে। এসব এলাকার জমি ও আবহাওয়া হলুদ চাষের উপযোগী হওয়ায় লাভ বেশি হয়ে থাকে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৬
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।