ঢাকা, রবিবার, ২৫ কার্তিক ১৪৩১, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নৌকা নিয়ে স্মৃতিসৌধে ছিদ্দিক

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৬
নৌকা নিয়ে স্মৃতিসৌধে ছিদ্দিক ছবি: জি এম মুজিবুর, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বঙ্গবন্ধু মাথায় হাত রেখে আদর করে বলেছিলেন, এই ছেলে এ দেশের নাগরিক, এরাই ছাত্রলীগ হবে, এরাই যুবলীগ হবে, এরাই আওয়ামী লীগ করবে।

জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে: বঙ্গবন্ধু মাথায় হাত রেখে আদর করে বলেছিলেন, এই ছেলে এ দেশের নাগরিক, এরাই ছাত্রলীগ হবে, এরাই যুবলীগ হবে, এরাই আওয়ামী লীগ করবে।

 

বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিন‍াকে একবার সালাম দিতে পারলেই আমি খুশি, আর কিছু চাই না।

   
 
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিদ্দিক সত্তর সালের স্মৃতি তুলে ধরে কথাগুলো বলছিলেন সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের সামনে দাঁড়িয়ে।

বিজয় দিবসের আগের রাত স্মৃতিসৌধের সামনে নিজের বানানো নৌকা নিয়ে হাজির হন ছিদ্দিক।
 
রাত সাড়ে নয়টার দিকে স্মৃতিসৌধের সামনে ফুটপাতের উপর নৌকায় বসেছিলেন ছিদ্দিক। নৌকার মধ্যে তার দুই ছেলে শাকিব ও আশিক।
 
স্বাধীনতার আগের বছর ১৯৭০ সালে নেত্রকোনা সরকারি কলেজ মাঠে বঙ্গবন্ধুর এক সমাবেশে জনতা কলেজের ছাদ ভেঙে পড়ে। সে সময় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিদ্দিকও ব্যথা পায়।
 
“বঙ্গবন্ধু আমাকে নিয়ে মঞ্চে যান, মাথায় হাত রেখে বলেন, তোমরাই আওয়ামী লীগ করবা”, বলছিলেন ছিদ্দিক।
 
বঙ্গবন্ধুর গল্প বলছেন সিদ্দিকবঙ্গবন্ধুর সেই দিনের কথা স্মরণ করে ষাট বছরের ছিদ্দিক বলেন, আমি সেই থেকে আওয়ামী লীগ করি, আমার ছেলেদেরও আওয়ামী লীগের কর্মী বানাবো।
 
একটি রিকশার কাঠামোর উপর লোহা ও টিন দিয়ে প্রায় ১২ ফুট দৈর্ঘ্যের নৌকা তৈরি করেছেন ছিদ্দিক। আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আগে নেত্রকোনো থেকে সেই নৌকা নিয়ে এসে নজর কেড়েছিলেন তিনি, চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটু সাক্ষাৎ করতে। কিন্তু গণভবনের সামনে একাধিক দিন দাঁড়িয়ে থেকেও দেখা পাননি, তাই প্রধানমন্ত্রীর আগমনের স্থানে আবারও নৌকা নিয়ে এসেছেন।
 
সতের হাজার টাকায় তৈরি করা নৌকাটি ন্যাম ভবনে রেখে বাড়ি গিয়েছিলেন ছিদ্দিক, চারদিন আগে নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা পাইলাটি থেকে এসে রঙ করে, লাল-সবুজের পতাকা এঁকে নিয়ে এসেছেন আবারও।
 
“প্রধানমন্ত্রীকে দূর থেকে শুধু একটা সালাম দিতে চাই, কিন্তু থাকতে দেবে কিনা”, নিজে নিজেই বলছিলেন ছিদ্দিক।
 
নিজের কয়েক শতক জমিতে চাষাবাদ করেন ছিদ্দিক, তা দিয়েই চলে সংসার। ছয় ছেলে, এক মেয়ে এবং স্ত্রী এ নিয়ে তার সংসার।
 
বড় দুই ছেলে ঢাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি করে, ছোট দুই ছেলে শাকিব (৭) ও আশিক (৫) বাবার সঙ্গে এসেছেন। ছেলে দু’টি ঘুমাচ্ছে, হাতে কয়েল নিয়ে বসে আছেন ছিদ্দিক।
 
রাতে স্মৃতিসৌধে আসা লোকজন ছিদ্দিককে ঘিরে তার গল্প শুনছিলেন, বঙ্গবন্ধুর গল্প বলে স্বস্তির নিঃশ্বাস তার মুখে।
 
“যতোদিন প্রধানমন্ত্রীর দেখা না পাব, প্রধানমন্ত্রী যেখানে যাব ততোদিন সেখানে যাব”, বলেন ছিদ্দিক।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৬
এমআইএইচ/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।