ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

২০ বিঘা জমির তিন হাজার কাঁদি কলা কেটে ফেলল দুর্বৃত্তরা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২
২০ বিঘা জমির তিন হাজার কাঁদি কলা কেটে ফেলল দুর্বৃত্তরা!

মেহেরপুর: মেহেরপুর সদর উপজেলার চাঁদবিল গ্রামের শ্রী গাড়ির মাঠে কৃষকের ২০ বিঘা জমির কলা কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এতে কৃষকের আনুমানিক ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতের কোনো এক সময় এ ঘটনা ঘটায় তারা।

দুর্বৃত্তরা চাঁদবিল গ্রামের কলা চাষি জসিম উদ্দীনের পাঁচ বিঘা, হাসেম আলীর আড়াই বিঘা, আব্দেল হকের তিন বিঘা, আনিছুদ্দীনের দেড় বিঘা, তুফান আলীর এক বিঘা, আব্দুর রাজ্জাকের ১০ কাঠাসহ ও মেহেরপুর শহরের প্রায় ১০ জন কৃষকের ক্ষেতের কলা কেটে ফেলে।

চাঁদবিল গ্রামের কৃষক আব্দেল হক বলেন, গ্রামের সেলিম হোসেনের কাছ থেকে আমি তিন বিঘা জমি লিজ নিয়েছি। এই লিজ নেওয়াকে কেন্দ্র করে বন্দর গ্রামের কলা চাষি খোরজেল হোসেনের সঙ্গে মনোমালিন্য হয়। এই তিন বিঘা জমি আগে খোরজেলের কাছে লিজে ছিল। ওই জমি আমি লিজ নিলে খোরজেল আমাকে হুমকিও দিয়েছিল। তার হুমকি দেওয়ার কয়েকদিন পরেই এই মাঠের আমিসহ ১০ জন চাষির গাছের কলা কেটে তছরুপ করা হলো।

কৃষক জসিম উদ্দীন বলেন, আমি অন্যের জমি লিজ নিয়ে কলা চাষ করি। এনজিওসহ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কলার চাষ করেছি। আমার সব গাছের কলা কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আমি এখন কি করে ঋণ পরিশোধ করবো এ চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি।

হাসেম আলী বলেন, কলা চাষই আমাদের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন। কলা প্রায় বিক্রির উপযোগী হয়ে গিয়েছিল। আর মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই কলা বিক্রি হত। ঠিক বিক্রির সময়ে এত বড় ক্ষতি হয়ে গেল। আমি এই দুর্বৃত্তদের খুঁজে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

আনিছুদ্দীন বলেন, আমি একজন বর্গা চাষি। অন্যের জমি লিজ নিয়ে কলা চাষ করেছি। আমি জনপাট খেটে খায়। আমার তো সবই হারিয়ে গেল।

এসব কৃষকরা জানান, তাদের প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজনদের আসামি করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকরা।

সদর উপজেলা কৃষি অফিসার নাসরিন আক্তার জানান, ১৫ থেকে ২০ বিঘা জমির প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার কাঁদি কলা তছরুপ করা হয়েছে। সকালে খবর পেয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ শংকর কুমার মজুমদার, সদর উপজেলা কৃষি অফিসার নাসরিন আক্তার ঘটনাস্থলে যান। এসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকারি সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে বলেও জানান তিনি।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম সরেজমিনে তদন্ত করে এসেছেন। কৃষকরা লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।