ঢাকা: আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিভাগীয় গণ সমাবেশের ভেন্যু নিয়ে বিএনপি-পুলিশ এখনো মতৈক্যে পৌঁছাতে পারেনি। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পুলিশের অনুমতি ও বিএনপি আপত্তির মুখে চলছে নানা আলোচনা।
এ পর্যায়ে বিএনপির প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে তাদের প্রতিনিধিকে সঙ্গে নিয়ে সাম্ভাব্য ভেন্যুর জন্য একাধিক এলাকা ঘুরে দেখবে পুলিশ।
রোববার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে ডিএমপি সদর দপ্তরে যায় বিএনপির ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
বিএনপির সঙ্গে ডিএমপি কমিশনারের সাক্ষাতের বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন।
রোববার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, বিকেলে ৬ সদস্যের বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবর্তে নয়া পল্টনের সমাবেশ করতে চাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির প্রতিনিধি দলটিকে ডিএমপি জানায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি দলটি যদি অন্য কোনো স্থানের সন্ধান পায়, আর সে বিষয়ে তারা প্রস্তাব দিলে বিবেচনা করা হতে পারে। ডিএমপি বিবেচনা করবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে আরও নিরাপদ কোনো ভেন্যু আছে কিনা।
তিনি বলেন, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি ও ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার আজ রাতে বেশ কয়েকটি ভেন্যু পরিদর্শন করবেন। তারা রাজধানীর আরামবাগ, পল্টন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা পরিদর্শন করবেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছি কারণ, আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে ওই স্থানটি সবচেয়ে নিরাপদ। আমরা বিএনপিকে অনুরোধ করেছি ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করার জন্য। ওই সমাবেশকে কেন্দ্র করে যত ধরনের নিরাপত্তা সহযোগিতা করার দরকার সেই পদক্ষেপ আমরা নেব।
নতুন ভেন্যু খোঁজার প্রস্তাবনাটা বিএনপির পক্ষ থেকে এসেছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা নতুন কোনো ভেন্যুর প্রস্তাব দেইনি। কারণ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দিয়েছি। বিএনপি এখন নতুন ভেন্যু খুঁজছে, তারা প্রস্তাব দিয়েছে। তবে তারা এখনো দাবি করছে নয়া পল্টনে তাদের অনুমতি দেওয়ার জন্য। আমরা আশা করি বিএনপি তাদের সমাবেশটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই করবে।
১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে, দলটির পক্ষ থেকে এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে আমাদের যে বিশেষ অভিযানটি চলছে সেটি আমাদের নিয়মিত কার্যক্রম। প্রতিমাসে আমরা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের বিশেষ অভিযান ঘোষণা করে থাকি।
আসন্ন ১৬ ডিসেম্বরে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কোনো ধরনের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির যেন না ঘটে, সে বিষয়টিকে সামনে রেখে পুলিশ সদরদপ্তর ১৫ দিনের একটি বিশেষ অভিযান ঘোষণা করেছে। এই নির্দেশনার প্রেক্ষিতে ডিএমপি ঢাকা মহানগর এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে।
আমাদের বিশেষ অভিযানের লক্ষ্য ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি, মাদক ব্যবসায়ী ও জঙ্গিদের গ্রেফতার করা। এখানে কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে না। যাদের নামে মামলা এবং ওয়ারেন্ট আছে তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ হলে আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে কোনো কোন্দল বা সংঘর্ষের শঙ্কার বিষয়টি ডিএমপির বিবেচনায় আছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা যখন অনুমতি দেই তখন বিভিন্ন হুমকি বিশ্লেষণ করে দেখি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশে পরিস্থিতি ঠিক রাখার জন্য যত ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সেই প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০২২
পিএম/এমএমজেড