মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন দীর্ঘ ৭ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে পুরো জেলায় এখন উৎসবের আমেজে মেতেছে। পছন্দের নেতৃত্ব আসবে এমন প্রত্যাশায় সময় অতিবাহিত করছেন নেতাকর্মীরা।
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতা সমর্থকরা নিজের অবস্থান জানান দিতে শতশত নেতাকর্মী নিয়ে জেলা শহরে শোডাউন ও ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে ফেলেছে। গত ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারীতে মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে সভাপতি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হলেও সাধারণ সম্পাদক পদের পরিবর্তন হয়।
জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ডিসেম্বরের ১১ তারিখে জেলা শহরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এছাড়াও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড.আব্দুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ডা.দীপু মণি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড.আবদুস সোবহান গোলাপ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সম্মানিত জাতীয় পরিষদের সদস্য জাহিদ মালেক স্বপনসহ স্থানীয় সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
বিগত বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এবং বিএনপির সমর্থিত প্রার্থীরা বিজয়ী হওয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির উপর তিক্ত অভিজ্ঞতা বিরাজমান। সম্প্রতি জেলা পরিষদ নির্বাচনের জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মহীউদ্দীন নির্বাচন করেন এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী স্বতন্ত্র হলেও তার থেকে অল্প কিছু ভোটে তিনি বিজয়ী হয়েছেন। সে জন্য জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি নতুন নেতৃত্বে সাজানোর দাবি তৃণমূলের নেতাকর্মীর।
জানা যায়, জেলা সম্মেলনের দিন তারিখ ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই রব রব সাজে সেজেছে জেলা উপজেলা গুলো। এই সম্মেলনকে ঘিরেই রাজনীতির মাঠে চাঞ্চল্যকর বার্তা বইতে শুরু করেছে। নতুন নেতৃত্বে চলবে জেলা আওয়ামী লীগ নাকি পুরাতন নেতৃত্বে চলবে দলটি এমন বার্তার অপেক্ষায় স্থানীয় নেতা কর্মীরা। তবে এমন জল্পনা কল্পনার মধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে।
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সভাপতি পদে প্রার্থীরা হলেন, গত সম্মেলনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বী বিজয়ী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম মহীউদ্দিন এবং সহ-সভাপতি ও সাটুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ ফটো। অন্যদিকে সম্মেলনের সাধারণ সম্পাদক পদই মূল আকর্ষণ বলে মনে করছেন নেতারা।
সে জন্য সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী, জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌরসভার মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাদরুল ইসলাম খান বাবলু, যুগ্ম সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন টিপু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল, তায়েবুর রহমান টিপু, সাংগঠনিক সম্পাদক সুদেব কুমার সাহা এবং শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক তাবারাকুল তোসাদ্দেক হোসেন খান টিটু।
তবে এই রাজনীতির মাঠে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রচার-প্রচারণা, শোডাউন ও পেনার ফেস্টুনে এগিয়ে আছেন বর্তমান কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল এবং সাংগঠনিক সম্পাদক সুদেব সাহা।
জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক এহতেশাম হোসেন খান ভুনু বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আমরা সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছি। আমাদের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত আগামী ১১ ডিসেম্বর সফল ভাবে সম্মেলন অনুষ্ঠিত করতে। কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ আসবে এবং সুসংগঠিত একটি কমিটি জেলাবাসীকে উপহার দিবে।
মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম বলেন, স্মরণকালের সবচেয়ে সফল সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে এটি। এই সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগ আরও ঐক্যবদ্ধ হবে এবং অতীতেও দলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রেখে অপরাজনীতি প্রতিহত করেছে। দলকে আরও সুসংগঠিত করে আগামী দিনে জামায়াত বিএনপির অগ্নি সন্ত্রাস ও জ্বালাও-পোড়াওয়ের রাজনীতি নসাৎ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০২২
এসএম