ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সালথায় অসচ্ছল কৃষকের প্রণোদনা পেলেন চাকরিজীবী-জনপ্রতিনিধি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩
সালথায় অসচ্ছল কৃষকের প্রণোদনা পেলেন চাকরিজীবী-জনপ্রতিনিধি

ফরিদপুর: ফরিদপুরের সালথায় পানির অভাবে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়া অসচ্ছল কৃষকদের জন্য বরাদ্দকৃত প্রণোদনার টাকার চেক সরকারি চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি ও সচ্ছল ব্যক্তিদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এতে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে অসচ্ছল প্রান্তিক কৃষকরা।

কৃষকদের দাবি পাট অধিদপ্তরের কৃষি প্রণোদনার খবর তারা জানেনই না। তাদের অভিযোগ পাট অফিসের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা যোগসাজশে প্রণোদনার এ টাকার ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।  

জানা গেছে, পাট উৎপাদনে দেশসেরা সালথা উপজেলা। এবার ভরা মৌসুমে নদ-নদী ও খাল-বিলে পর্যাপ্ত পানি না হওয়ায় পাট পঁচাতে বাড়তি খরচ বিবেচনায় পাট অধিদপ্তর পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে অসচ্ছল কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় সালথায় ৮ জন অসচ্ছল কৃষককে ১১ হাজার ৮০০ টাকার করে একেকটি চেক বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু বেশিরভাগ কৃষকই জানেন না এ প্রণোদনার কথা।

চেক বিতরণের তালিকায় দেখা যায়, সালথার ৮ জন অসচ্ছল কৃষকের স্থলে চেক গ্রহণ করেছেন উপজেলা পরিষদের অফিস সহায়ক শাহাদত হোসেন, রামকান্তুপুর গ্রামের গরুর খামার ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান, সালথার জাহিদ হাসান, ফুকরা বাজারের ব্যবসায়ী আবুল হোসেন, রামকান্তুপুর ইউনিয়নের ব্যবসায়ী মোক্তার মোল্যা, ইব্রাহিম হোসেন ও যদুনন্দী ইউনিয়নের মো. আবুল হাসান।

সালথার জয়ঝাপ গ্রামের কৃষক সুরমান মোল্যা বলেন, পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারিনি। নোংরা পানিতে পাট জাগ দেওয়ায় পাটের কালার নষ্ট হয়ে গেছে। আবার অনেকের পাট ক্ষেতেই শুকিয়ে মরে গেছে। এবার একবিঘা জমিতে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ মণ পাট হয়েছে। প্রতিবিঘায় খরচ হয়েছে ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকা করে। এমন অবস্থায় পাটের যে দাম পাচ্ছি তাতে আমাদের খরচই উঠছে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পাট অধিদপ্তর থেকে আমাদের মতো ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা কোনো ধরণের প্রণোদনা পায়নি। এমনকি এই বিষয় আমরা কিছু জানিও না।

সালথা উপজেলা উপ-সহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুল বারী বলেন, এবার যাদের পাটের প্রণোদনা দিয়েছি তারা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত। এরা সবাই ওই সময় গর্ত খুড়ে মেশিন দিয়ে পানি ভরে পাট জাগ দিয়েছিল। আমি নিজে বাছাই-বাছাই করে প্রণোদনার তালিকা করেছি। এখানে কোনো ধরণের অনিয়ম হয়নি।

ফরিদপুর জেলা পাট অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জাহিদুর ইসলাম বলেন, কৃষক নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি-না তা আমার জানা নেই। আমি এই প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলবো।

কৃষিবিভাগের তথ্যমতে সালথা উপজেলায় ৩২ হাজার ৮০০ টি কৃষক পরিবার পাট চাষের সাথে সরাসরি জড়িত। যাদের অধিকাংশই অসচ্ছল ও প্রান্তিক কৃষক।

বাংলাদেশ সময়: ২২২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩
জেএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।