সিলেট: প্রথমে মারধরের শিকার হয়েছিলেন। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার চেয়ে করেছিলেন মামলা।
তার স্বজনরা জানান, আরিফ সম্প্রতি মারধরের শিকার হলে গত সোমবার (২০ নভেম্বর) রাতে তার মা আঁখি বেগম বাদী হয়ে নগরের শাহপরান (র.) থানায় মামলা করেন। মামলায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এবং সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) বর্তমান কাউন্সিলর হিরণ মাহমুদ নিপু গ্রুপের সাতজনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০/১২ জনকে আসামি করা হয়।
মামলা দায়েরের ঘটনার জেরে সোমবার রাত পৌনে ১২টার দিকে নগরের টিভি গেট এলাকায় বাসার সামনে আরিফ মিয়াকে কুপিয়ে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায় হামলাকারীরা। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার দেহে অন্তত ১২টি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসকরা।
আরিফ মিয়া (১৯) টিভি গেইট এলাকার ফটিক মিয়ার ছেলে। তিনি সিলেট সরকারি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যডভোকেট রঞ্জিত সরকার গ্রুপের অনুসারী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন অংশের কর্মী।
আরিফের মা আঁখি বেগমের দাবি, ৪-৫ দিন আগে সাবেক কাউন্সিলর হিরণ মাহমুদ নিপু গ্রুপের ছাত্রলীগ ক্যাডাররা তার ছেলেকে মারধর করে। এ ঘটনায় মামলা করায় কাউন্সিলর নিপুর নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে তার ছেলেকে হত্যা করা হয়। ছেলে হত্যার ঘটনায় সাবেক জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও স্থানীয় কাউন্সিলরকে দায়ী করেছেন তিনি।
আরিফের স্বজনরা জানান, ৪-৫ দিন আগের হামলায় আরিফ আহত হয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত রোববার (১৯ নভেম্বর) সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরেন। ওই হামলার ঘটনায় সোমবার রাতে শাহপরান থানায় মামলা করে বাসায় ফেরেন তিনি ও তার মা। এরপর রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে আরিফ বাসার সামনে হাঁটতে যান। তখনই কাউন্সিলরের অনুসারী ছাত্রলীগকর্মীরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।
সিলেট জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নাজমুল ইসলাম বলেন, আরিফ ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী। চার-পাঁচদিন আগে আরিফের ওপর হামলা করেছিল এলাকার কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী। ঘটনায় নগরের শাহপরান থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। সেখান থেকে ফেরার সময় তার ওপর হামলা চালানো হয়।
এটাকে পরিকল্পিত দাবি করে নাজমুল ইসলাম বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার সিদ্ধান্ত নিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি জানাবে জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ।
সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান (র.) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বাংলানিউজকে বলেন, ছাত্রলীগ কর্মীর মা বাদী হয়ে পূর্বের হামলার ঘটনায় সোমবার রাতে সাতজনের নামে মামলা দায়ের করেন।
এদিকে, সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে নগরের এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। এ দুজন হলেন নগরের শান্তিবাগ সোনার বাংলা এলাকার বাচ্চু মিয়ার ছেলে ছাত্রলীগকর্মী রণি ও বালুচর মাল চত্বরের কামাল মিয়ার ছেলে ছাত্রলীগ কর্মী মামুন মজুমদার। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২৩
এনইউ/এইচএ/
আরও পড়ুন: সিলেটে ছাত্রলীগকর্মীকে কুপিয়ে হত্যা