মাগুরা: মাগুরার শ্রীপুরে অপহরণের ১৩ দিন পেরিয়ে গেলেও উদ্ধার হয়নি এক মাদরাসা ছাত্রী। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে শ্রীপুর থানায় একটি অপহরণ মামলা করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, শ্রীপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের তার বাড়ি। সে তখলপুর হাতেম আলী দাখিল মাদরাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সকালে বাড়ি থেকে মাদরাসার উদ্দেশে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি সে। পরে পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন।
এর দুইদিন পর তার বাবা জানতে পারেন, তার মেয়ে ওইদিন বাড়ি থেকে বের হয়ে মাদরাসার উদ্দেশে রওনা দিলে ফুলতলা মোড়ে পৌঁছানোর আগে শিবলু মোল্যা (২৮) নামে এক যুবক দলবল নিয়ে তাকে অপহরণ করেছে। পরে ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে শ্রীপুর থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন।
এ মামলায় শ্রীপুর উপজেলার তখলপুর গ্রামের বিষে মোল্যার ছেলে শিবলু মোল্যা (২৮), মেয়ে সোহাগী আক্তার মীম (২৫), মো. পিয়ারুল ইসলাম (২৮), মোহাম্মদ আলী জোয়ার্দারকে (২৮) আসামি করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিবলু মোল্যা পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। তিনি বিভিন্ন ছলনায় ওই শিক্ষার্থীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই ছাত্রীকে নিয়ে তিনি ভারতের বম্বেতে পাড়ি দেন। বর্তমানে তারা ভারতের বম্বে অবস্থান করছেন৷ তার কাজই মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচার করা। এভাবে তিনি তিনটি বিয়ে করেছেন। দুই স্ত্রী তাকে ছেড়ে গেলেও সে দুই সন্তানের জননী স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করছিল।
ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, আমার মেয়েকে উদ্ধারের জন্য পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেও তার কোনো সন্ধান পাইনি। আমি আমার মেয়েকে ফেরত চাই।
অভিযুক্ত শিবলু মোল্যার মা আকলিমা বেগম বলেন, আমার ছেলে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতো। সে তিনটা বিয়ে করেছে, ঘসিয়াল শ্বশুরবাড়িতেই থাকতো সে। মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসতো। এখন কোথায় আছে জানি না।
তখলপুর হাতেম আলী দাখিল মাদরাসার সহকারী সুপার জহুরুল ইসলাম জানান, ওই ছাত্রী আমাদের মাদরাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী। সে মাদরাসায় নিয়মিত আসতো না। সর্বশেষ সে ১১ ফেব্রুয়ারি মাদরাসায় আসছিল। দুই-তিন দিন কেউ মাদরাসায় না এলে আমরা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে খোঁজখবর নিয়ে থাকি। তার খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।
হাতেম আলী দাখিল মাদরাসায় নবম শ্রেণির দুই ছাত্রী জানায়, সে নিয়মিত মাদরাসায় আসতো না। আর কোনো বিষয় আমাদের সঙ্গে শেয়ার করতো না।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ তাসমীম আলম জানান, ওই ছাত্রীকে উদ্ধারের জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৪
আরএ