ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ আষাঢ় ১৪৩১, ১৮ জুন ২০২৪, ১০ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

গরুর হাটে তীব্র গরমে পশু নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪২ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২৪
গরুর হাটে তীব্র গরমে পশু নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা

মাদারীপুর: মাদারীপুরের বিভিন্ন গরুর হাটে জমে উঠেছে কেনা-বেচা। ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতার সংখ্যা বেশি হলেও দাম একেবারে কমও যাচ্ছে না।

তবে তীব্র গরমে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। গরমে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে হাঁপিয়ে উঠছে গরুগুলো! চার্জার ফ্যান দিয়ে অনবরত বাতাস করতে দেখা যাচ্ছে। আবার কেউ হাত পাখা দিয়েও বাতাস করছে গরুকে। শুক্রবার(১৪ জুন) দুপুরে শিবচরের নিলখী বন্দর গরুর হাটে দেখা গেছে এই চিত্র।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শুক্রবার সকাল দশটা থেকেই হাটে গরু নিয়ে আসতে শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় কৃষক, খামারি এবং গরুর ব্যবসায়ীরা নিয়ে আসেন কোরবানির গরু। বেলা বাড়ার সাথে সাথে পশুর হাট ভরে উঠে গরু-ছাগলে। সকাল থেকে গরু উঠলেও মূল বেচাকেনা শুরু হয় দুপুর ২টার পর থেকে।  

হাট ঘুরে দেখা গেছে, গত বছরের তুলনায় এ বছর গরুর দাম বেশি। তবে বিক্রেতার তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা কম। হাটে পর্যাপ্ত গরু বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতারা জানান, হাটে প্রচুর গরু থাকলেও দাম ছাড়ছেন না বিক্রেতারা। গরুর পাশাপাশি ছাগলও বিক্রি হচ্ছে। ছাগলের দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে বলে ক্রেতারা জানান। সাধারণ কৃষকের বাড়িতে বড় হওয়া গরুর দাম স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেশি যাচ্ছে।

একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান, দু'দিন পরই কুরবানি। এখন হাটে নিয়ে আসা গরু বিক্রি করেই বাড়ি ফেরার ইচ্ছা। গরু ফিরিয়ে নিতে গেলে খরচ বেড়ে যায়। গরুর উপর বাড়তি ধকলও পড়ে। সব মিলিয়ে মোটামুটি লাভ হলেই বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে গরু। গত বছরের তুলনায় দাম খুব বেশি নয়। এদিকে তীব্র গরমে খুবই দুর্ভোগ হাটের মধ্যে। গরুগুলো হাঁপিয়ে উঠছে। আকারে বড় গরু নিয়ে দুশ্চিন্তা বেশি।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর মাদারীপুরে বিভিন্ন খামারে প্রায় ৩ লক্ষাধিক গরু, ১শ ৬৫টি মহিষ, ২শ ৪৬টি ভেড়া এবং ২ লক্ষাধিক ছাগল লালন-পালন হচ্ছে। এর মধ্যে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জেলার চারটি উপজেলার খামারগুলোতে গরু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। কোরবানির জন্য ৮ হাজার ৬৯৭ টি খামারে ৩৬ হাজার ৫শ ৯২টি গরু এবং ৩৮ হাজার ৭শ ৬৭টি ছাগল প্রস্তুত রয়েছে। তবে জেলায় পশুর মধ্যে গরুর চাহিদা রয়েছে ৩৩ হাজার ৫শ ৫০টি, ছাগল ৩৩ হাজার ২শ ৫০টি। চাহিদার তুলনায় কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত থাকছে।

হৃদয় হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, হাটে ১০টি গরু নিয়ে এসেছি আমরা। দুপুর ৩টার মধ্যে ৭টি বিক্রি হয়ে গেছে। দাম মোটামুটি ভালোই পেয়েছি। নিলখী বন্দর হাটে প্রচুর গরু উঠে। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারাও আসেন পছন্দমত গরু কিনতে।

মো. কামাল হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন,যাচাই-বাছাই শেষে একটি গরু কিনেছি। দাম একটু বেশিই যাচ্ছে।

নিলখী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর শিকদার বলেন, বেশ জায়গাজুড়ে এই হাটটি। সার্বিক শৃঙ্খলা বজায় রেখে ব্যবসায়ীরা এখানে কেনা-বেঁচা করতে পারেন। পুলিশ ছাড়াও হাট কমিটির দায়িত্বে থাকা একাধিক লোকজন সার্বিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করছে। ক্রেতা-বিক্রেতারা শান্তিপূর্ণ ভাবে কেনাবেচা করতে পারছেন।

মাদারীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.সুবোধ কুমার দাস জানান, মাদারীপুর জেলার চাহিদার চেয়েও অতিরিক্ত কোরবানির পশু রয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে মাদারীপুরে পালিত দেশীয় জাতের গরু অন্য জেলাতেও যাবে এবং দামও পাবে বেশি এমনটা প্রত্যাশা করি।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪২ ঘণ্টা, জুন ১৫,২০২৪
এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।