ঢাকা, শনিবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৭ জুলাই ২০২৪, ২০ মহররম ১৪৪৬

জাতীয়

বাগেরহাটে চুরির অপবাদ দিয়ে মা-মেয়েকে নির্যাতন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২৪
বাগেরহাটে চুরির অপবাদ দিয়ে মা-মেয়েকে নির্যাতন

বাগেরহাট: বাগেরহাটের শরনখোলায় মুরগি চুরির অপবাদ দিয়ে কিশোরী মেয়ে ও মাকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।  

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার আমড়াগাছিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

 

নির্যাতিত কিশোরী লামিয়া ও তার মা বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।  

শনিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিত কিশোরী লামিয়া আক্তার বলে, মা অনেকদিন ধরে অসুস্থ। বৃহস্পতিবার সকালে মায়ের ওষুধ কিনতে বাজারে যাওয়ার পথে স্থানীয় মাওলানা আশরাপ আলী আমাকে ডেকে তার বাড়ির ভেতরে নেন এবং মুরগি চুরি করেছি বলে মারধর করেন। পরে তারা ধানসাগর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তপু বিশ্বাসকে ডেকে নিয়ে আসেন। তপু বিশ্বাস এসে কোনো কিছু না শুনে প্রথমে লাঠি দিয়ে আমাকে মারধর করেন। পরে হাত-পা বেঁধে পায়ের তলায় পিটাতে থাকেন। একপর্যায়ে মা এলে, তাকেও বেঁধে মারধর করেন তপু বিশ্বাস। তপু বিশ্বাস আমার বোরকা ছিড়ে ফেলেন, আমার গায়ে হাত দেন। তিনি বলেন-মুরগি চুরির জরিমানা হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে, না হলে আবারও মারধর করা হবে। মারধর শেষে আমার গলায় ধারালো দা ধরে, মুরগি চুরি করেছি বলে স্বীকারোক্তি দিতে বলেন। বাধ্য হয়ে প্রাণ বাঁচাতে আমি মুরগি চুরি করেছি, বলে স্বীকারোক্তি দেই।

নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরী আরও বলে, আমি কখনও মুরগি চুরি করিনি। আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করা হয়েছে। আমি এই অন্যায়ের বিচার চাই।

তপুর নির্যাতনের ফলে অসুস্থ হয়ে ওই কিশোরীর মা লাইলি বেগমও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি বলেন, ইউপি সদস্য তপু বিশ্বাস আমার মেয়েকে মারধর করছে, ডেকে নিয়ে আমাকেও মারধর করেছে। আলাদা ঘরের মধ্যে বসিয়ে হাত বেঁধে মারধর করেছে। আমার বাচ্চা মেয়েকে যেভাবে পিটিয়েছে তা কোনো মা সহ্য করতে পারে না। আমাদের কাছে ৫০ হাজার টাকা চেয়েছে। আমরা এই অন্যায়ের বিচার চাই।

এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ধানসাগর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তপু বিশ্বাস বলেন, স্থানীয়রা মুরগি চোর ধরেছে বলে আমাকে খবর দেন। ঘটনাস্থলে অনেক লোকজন ছিল। আমি থানার তদন্ত ওসিকে ফোন দিয়েছিলাম। তিনি বলেছেন স্থানীয়দের নিয়ে মীমাংসা করে ফেলতে। ঘটনাস্থলে যারা ছিল তাদের সমন্বয়ে ছয় হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে শুনি রাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আসলে তাদের নির্যাতন করা হয়নি।

বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. পার্শা সানজানা বলেন, নির্যাতনের শিকার মা-মেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আমরা তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছি। তাদের অবস্থা এখন কিছুটা ভালো।  

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।