ঢাকা, শনিবার, ২৬ শ্রাবণ ১৪৩১, ১০ আগস্ট ২০২৪, ০৪ সফর ১৪৪৬

জাতীয়

ঢাবির টিএসসিতে রাজনীতি নিষিদ্ধ করে বিবৃতি

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২৪
ঢাবির টিএসসিতে রাজনীতি নিষিদ্ধ করে বিবৃতি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) সকল ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধসহ ৬ সিদ্ধান্তে একমত হয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে টিএসসিভিত্তিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। এতে টিএসসিতে রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি কিংবা রাজনৈতিক সংগঠন কর্তৃক সাংস্কৃতিক কর্মসূচি আয়োজন করা যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

শুক্রবার (৯ আগস্ট) তারা এই বিবৃতি দেওয়া হয়।

বিবৃতিতে বলে হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত স্বৈরাচার বিরোধী জুলাই গণঅভ্যুত্থান দেশের ইতিহাসে এক নতুন ক্রান্তিলগ্নের সূচনা এনেছে। সংগ্রামী শিক্ষার্থীসমাজ ও তরুণ-তরুণীদের হাত ধরে সূচিত এই আন্দোলনে শুরু থেকেই টিএসসিভিত্তিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যবৃন্দ প্রতিবাদী ভূমিকায় সোচ্চার থেকেছেন।

‘তবে দীর্ঘ স্বৈরশাসনের ফলে টিএসসিভিত্তিক সংগঠনগুলোকে ক্যাম্পাসে বিদ্যমান একক রাজনৈতিক শক্তির নানামুখী প্রভাব বিস্তারের শিকার হতে হয়েছে। ফলে নিজেদের নীতি, আদর্শ ও স্বকীয়তা বজায় রেখে কাজ করে যেতে প্রতিনিয়ত নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা ও ভয়ভীতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। ’

ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সংস্কৃতিকে রাজনীতির রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত করতে ৬টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠনগুলো। সিদ্ধান্তগুলো হলো-

১। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসিতে ডাকসু ব্যতীত সকল প্রকার ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।

২। রাজনৈতিক দলের পদে থাকা কর্মী কোনো অবস্থাতেই টিএসসিভিত্তিক কোনো সংগঠনের কার্যকরী সদস্য হতে পারবেন না এবং নেতৃস্থানীয় পদ অলংকৃত করতে পারবেন না।

৩। টিএসসি সীমানার মধ্যে অর্থাৎ প্রাঙ্গণ, পায়রা চত্বর, সুইমিংপুল, ভবন, কক্ষে কোনো প্রকার রাজনৈতিক কর্মসূচি আয়োজন করা যাবে না। কোনো রাজনৈতিক সংগঠন কর্তৃক আয়োজিত যেকোনো প্রকার সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় প্রভৃতি অনুষ্ঠানও এর আওতাভুক্ত হবে।

৪। সকল রাজনৈতিক সংগঠনের অঙ্গসংগঠনগুলোর জন্য বরাদ্দকৃত কক্ষসমূহ অবিলম্বে বাতিল করা হবে এবং শূন্য কক্ষগুলো নিবন্ধিত সক্রিয়, ছাত্রবান্ধব অথচ কক্ষবিহীন সংগঠন দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে। এ বছরের জুলাই পরবর্তী প্রেক্ষাপটে গজিয়ে ওঠা নামসর্বস্ব ভুইফোড় কোনো সংগঠন যেন শূন্য হওয়া এসব কক্ষ বরাদ্দ না পায় তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিশ্চিত করবে।

৫। দেশব্যাপী উদ্ভুত সহিংস ও অরাজক পরিস্থিতিতে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে অবস্থিত সংগঠন এবং সদস্যদের নিরাপত্তা বিধানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। একইসাথে পুরো ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের এলাকা সিসিটিভির আওতায় আনবে।

৬। কোনো সংগঠনের বর্তমান কোনো সদস্যের যদি 'জুলাই হত্যাকাণ্ড'র যেকোন সহিংসতার সাথে সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, তবে তাকে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার করতে হবে এবং তার বিরুদ্ধে পরিচালিত আইনি প্রক্রিয়ায় উক্ত সংগঠন সর্বাত্মকভাবে তথ্য-প্রমাণাদি প্রদান করে বিচারপ্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছে ঢাকা ইউনিভার্সিটি ট্যুরিস্ট সোসাইটি, ঢাকা ইউনিভার্সিটি সায়েন্স সোসাইটি, প্রভাতফেরি সাংস্কৃতিক সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইটি সোসাইটি, বাঁধন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জোন, জয়ধ্বনি সাংস্কৃতিক সংগঠন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার ক্লাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ, ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফটোগ্রাফিক সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছায়া জাতিসংঘ সংগঠন, ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম আ্যকশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নাট্য সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাহিত্য সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদ ও ঢাকা ইউনিভার্সিটি কুইজ সোসাইটি।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২৪
এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।