সিলেট: মৌলভীবাজারে চাঞ্চল্যকর ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ হত্যা মামলায় পিতা-পুত্রসহ তিন আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া আসামিদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) বেলা ২টার দিকে সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মকবুল আহসান এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মৌলভীবাজারের পতনউষার গোপীনগর এলাকার আজাদুর রহমান আজাদ (৫৫), তার ছেলে জুয়েল (২৫) ও আজাদের ভাতিজা আব্দুল হান্নানের ছেলে আব্দুস সামাদ রুবেল (২৬)।
পাশাপাশি মামলার ২০১ ধারায় লাশ গুমের অপরাধে কই এলাকার উস্তার মিয়া মাস্টারের ছেলে মুহিদ মিয়া (৩৫) ও সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামিকে আরও ৫ বছরের সশ্রম দণ্ডাদেশ ১ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলা থেকে ৭ জনকে বেখসুর খালাস দেওয়া হয়। তারা হলেন- দণ্ডপ্রাপ্ত আজাদুর রহমানের স্ত্রী ডলি বেগম, মেয়ে আমিনা আক্তার জুঁই, দণ্ডপ্রাপ্ত রুবেলের মা আলমা বেগম, মাসুক মিয়া, আজমান মিয়া, শাহীন মিয়া, আফরোজ মিয়া।
মামলার বরাত দিয়ে সংশ্লিষ্ট আদালত সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ২৯ আগস্ট রাতে প্রেম সংক্রান্ত কারণে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার গোপীনগর গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে নয়াবাজারের তরুণ ব্যবসায়ী আবদুল মজিদ খুন হন।
দাওয়াত খাওয়ানোর নাম করে মজিদকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে খুন করেন আজাদুর রহমানসহ তার পরিবারের লোকজন। হত্যার পর লাশ গুম করতে একটি ডোবায় ফেলে দেওয়া হয়। পরদিন ডোবা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ হাত-পা বাধা অবস্থায় মরদেহের সুরতহাল করতে গিয়ে দেখে- মরদেহের কানে শিকল ঢোকানো হয়। দুই কান কাটা এবং চোখ দু’টো উপড়ে ফেলা এবং পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি জখম করা হয়।
ঘটনার দু’দিন পর ১ সেপ্টেম্বর নিহত মজিদের বাবা আব্দুর রহমান ১১ জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামিরা হলেন- রুবেল, জুয়েল, আজাদ, মুহিদ, মাসুক, আফরুজ, সাহিন, আজমান, ডলি, আলমা ও নিহতের প্রেমিকা জুঁই।
পুলিশ তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৮ আগস্ট ১১ জনকে অভিযুক্ত করে এ মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করে। চার্জ গঠননের পর সর্বশেষ বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এ মামলার রায় হওয়ার কথা থাকলেও পূণরায় ২০ সেপ্টেম্বর ধার্য্য তারিখ রায় ঘোষণা করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট কিশোর কুমার কর।
এদিকে, রায়ের প্রতিক্রিয়ায় নিহতের পিতা আবদুর রহমান ও মামা আব্দু রব বাংলানিউজকে বলেন, ‘আদালতে ন্যায় বিচার পেয়েছি। তবে আমরা চেয়েছি আসামিদের যেনো মৃত্যুদণ্ড হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৫
এনইউ/বিএস