বরগুনা: বরগুনা সদর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীকে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন পুশ করাকে কেন্দ্র করে রোগীর স্বজনদের হামলায় সাত নার্সসহ নয়জন আহত হয়েছেন।
রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ওই হাসপাতালের পুরুষ বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন-দায়িত্বরত নার্স নাজমুন নাহার, সুইটি খানম, রিনা, সীমা, ওর্য়াডবয় মো. রাজু ও আবু মঈন গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শনিবার অচেতন অবস্থায় মাইনুল ইসলাম মঈন নামে এক রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার চিকিৎসার জন্য গ্লুকোজ স্যালাইন দেওয়া হয়। স্যালাইনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে অভিযোগ এনে নার্সদের ডেকে বকাঝকা করেন রোগীর স্বজনরা।
একপর্যায় মইনুলের বন্ধুরা ওয়ার্ডবয় রাজুর ওপর হামলা করলে রাজু দৌড়ে দায়িত্বরত নার্সদের রুমে আশ্রয় নেয়। হামলাকারীরা নার্সদের রুমে প্রবেশ করে তাকে এলোপাথাড়ি চড় ঘুষি, লাথি মারতে থাকে। এ সময় রুমে থাকা সাত/আটজন নার্সসহ ওয়ার্ডবয় রাজু ও মঈনকে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাতজনকে আটক করে।
এ ঘটনায় হাসপাতালের দায়িত্বরত নার্স ও ওয়ার্ডবয় দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করেন। পরে জেলা প্রশাসক মীর জহুরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার বিজয় বসাক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিচারের আশ্বাস দিলে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন তারা।
বরগুনা সদর হাসপাতালের শিক্ষানবীশ সেবিকা সুইটি বাংলানিউজকে বলেন, গতরাতে কে বা কারা মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন দিয়েছে সেটা আমরা জানিনা। আদৌ আমাদের কেউ সে স্যালাইন দিয়েছে কিনা তাও বলতে পারছি না। শুধু শুধু রোগীর স্বজনরা আমাদের ওপর হামলা করেছে। এতে আমাদের অনেকেই আহত হয়েছে। আমরা দুষ্কৃতিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
মাইনুল ইসলাম মঈনের বাবা এনামুল হক ওয়াহিদ বাংলানিউজকে বলেন, তার ছেলে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে ঘুমের ওষুধ খেলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়া হলে তা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মো. কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বহিরাগতরা দায়িত্বরত নার্স ও ওয়ার্ড বয়দের ওপর হামলা করে।
তিনি আরো বলেন, রোগীর ব্যবহার করা স্যালাইন হাসপাতাল থেকে দেওয়া হয়নি। কোথা থেকে এই স্যালাইন দেওয়া হয়েছে তা বলতে পারছি না। এ বিষয়ে বরগুনা থানায় মামলা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বরগুনা পুলিশ সুপার বিজয় বসাক বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৫
আরএ