খুলনা: যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার বর্ণি গ্রামের কলেজ ছাত্র মোস্তফা কবীর (২২) হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায়, ১৬ আসামির প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মোস্তফা ঝিকরগাছা শহীদ মশিউর রহমান ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টায় খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) এম এ রব হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আব্দুল গফুর, আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের মেম্বর, মো. হাবিবুর রহমান হাবিব, হাসানুজ্জামান ওরফে হাসান, আব্দুল জব্বার, ফারুক ওরফে ট্যারা ফারুক, বিল্লাল হোসেন, হাসানুজ্জামান ওরফে হাসান-২, আলতাফ হোসেন, সুজাত আলী ওরফে সুজাত হোসেন, আজিম, শহীদ মির্জা তপু, সুলতান আহমেদ ভূইয়া ওরফে হাতকাটা ভুইয়া, মোতাকাব্বির ওরফে কুব্বার, মারুফ।
দণ্ডপ্রাপ্ত সবাই ঝিকরগাছা উপজেলার বর্ণি গ্রামের বাসিন্দা।
এছাড়াও প্রত্যেক আসামিকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অন্যথায়, আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
মামলার এজাহারের উদ্ধৃতি দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এনামুল হক জানান, ২০০৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর বর্ণি গ্রামের দক্ষিণ মাঠে ইরি ধানের জমিতে পানি দেওয়াকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মোস্তফা কবীর সঙ্গে ওই এলাকার কয়েকজনের কথা কাটাকাটি হয়।
এসময় তারা মোস্তফাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একই বছরের ২২ ডিসেম্বর সকাল ৮টার দিকে মোস্তফা তার দুই ফুফাতো ভাই জহুরুল ও বুলবুলকে নিয়ে বাড়ি থেকে নারাঙ্গালী বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বাজারের পূর্ব দিকে বিল্লালের দোকানের কাছে পৌঁছালে সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র ও লোহার রড নিয়ে ধাওয়া করে।
কিছুদূর যাওয়ার পর সন্ত্রাসীরা মোস্তফাকে ধরে এলোপাথাড়িভাবে তার শরীরের অসংখ্য জায়গায় কুপিয়ে ও সবশেষে জবাই করে মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে উল্লাস করতে করতে পালিয়ে যায়।
পরে এলাকাবাসী ও স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে যশোরের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করার কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় মোস্তফার চাচা গাজী মো. রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে ২৩ ডিসেম্বর ঝিকরগাঝা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মজিবর রহমান ২০০৭ সালের ৬ ডিসেম্বর যশোরের আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। ২০১৫ সালের ৫ মার্চ চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৫
এমআরএম/এসএস