ঢাকা, সোমবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

খুলনার রাকিব হত্যা মামলা

১১ কার্যদিবসে রায় ঘোষণা ইতিহাস

মাহবুবুর রহমান মুন্না, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০১৫
১১ কার্যদিবসে রায় ঘোষণা ইতিহাস ছবি: মানজারুল ইসলাম

খুলনার আদালতপাড়া থেকে: খুলনায় পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হয়ে মোটর গ্যারেজ শ্রমিক শিশু রাকিব হত্যা মামলার রায় রোববার (০৮ নভেম্বর) ঘোষণা করা হচ্ছে।

বেলা ১২টার পরে খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক দিলরুবা সুলতানা চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করবেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।



হত্যা ঘটনার মাত্র ৩ মাস ৫ দিনের মাথায় আর ১১ বিচারিক কার্যদিবসে আলোচিত এ হত্যার মামলার রায় দিতে যাচ্ছেন আদালত।

যা খুলনার আদালতে নজিরবিহীন ঘটনা।

মামলার তিন আসামি হচ্ছেন- খুলনার শরীফ মোটরসাইকেল গ্যারেজ মালিক ওমর শরীফ, তার কথিত চাচা মিন্টু খান ও শরীফের মা বিউটি বেগম।

গত ০৬ সেপ্টেম্বর খুলনা মহানগর হাকিম আদালত বিচার কাজ শুরুর জন্য মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠান।

মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক দিলরুবা সুলতানা ০১ অক্টোবর দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটি বিচারের জন্য আমলে গ্রহণ করেন। এর মধ্য দিয়ে পৈশাচিক ওই হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু হয়।

গত ০৫ অক্টোবর তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন আদালত। ১১ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ছয় কার্যদিবসে মামলার ৩৮ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। ২৮ অক্টোবর ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫২ ধারা অনুযায়ী আসামিদের বক্তব্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।

গত ০১ নভেম্বর যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হওয়ার পর ০৮ নভেম্বর মামলার রায়ের দিন ধার্য করেন বিচারক। রোববার ১১তম কার্যদিবসে রায় ঘোষিত হতে যাচ্ছে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ, সাংবাদিক, আইনজীবী, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ও সাধারণ নাগরিকদের সহায়তার কারণে মামলাটির দ্রুত রায় ঘোষণা করা সম্ভব হচ্ছে।

রাষ্ট্রপক্ষে পিপি সুলতানা রহমান শিল্পী ও এপিপি মো. কামরুল হোসেন জোয়ার্দার, আসামিপক্ষে মাজহারুল আলম মিলন ও তৌহিদুর রহমান চৌধুরী তুষার মামলা পরিচালনা করেন। মানবাধিকার প্রতিনিধি হিসেবে মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মো. মোমিনুল ইসলাম ও মহসিন চৌধুরী, মহিলা আইনজীবী সমিতির লায়লা স্নিগ্ধা ও কনিষ্ঠা ধর মামলা পরিচালনার জন্য বাদীপক্ষে আদালতে উপস্থিত থেকে রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তা করেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনার সমন্বয়কারী মোমিনুল ইসলাম রোববার সকালে বাংলানিউজকে জানান, মাত্র ৩ মাস ৫ দিনের মাথায় ও ১১ বিচারিক কার্যদিবসে আলোচিত এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের রায় ঘোষণা আমার জানা মতে দেশে এটাই প্রথম।

সকাল সাড়ে দশটায় আদালত প্রাঙ্গণে এসেছেন রাকিবের বাবা  মো. নুরুল আলম, মা লাকি বেগম ও ছোট বোন রিমি। এ সময় মা লাকি বেগম কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, আশা করি, খুনিদের ফাঁসি হবে। তাদের ফাঁসি হলে রাকিবের আত্মা শান্তি পাবে।

রাকিব হত্যা মামলার মতো খুলনায় ঘটে যাওয়া চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি হোক এমনটাই দাবি করছেন উদ্যোগ খুলনা নামে সংগঠনটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই-খুদা।

দ্রুততার সঙ্গে এ বিচার সম্পন্ন হওয়ার মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের মনে বিচার বিভাগের ওপর আরও বেশি আস্থা ফিরে আসবে বলে মনে করছেন দৈনিক খুলনাঞ্চলের সম্পাদক মিজানুর রহমান মিলটন।

আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আদালতপাড়ায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

গত ৩ আগস্ট বিকেলে নগরীর টুটপাড়া কবরখানা মোড়ে শরীফ মোটরসের মালিক শরীফ যানবাহনের টায়ারে হাওয়া দেওয়া (কম্প্রেসার) মেশিনের নল ১২ বছরের শিশু রাকিবের মলদ্বারে ঢুকিয়ে হাওয়া দিতে থাকেন। এতে তার পেট ফুলে ফেঁপে যায়। এক পর্যায়ে রাকিব মারা যায়।

পরের দিন ০৪ আগস্ট রাকিবের বাবা মো. নুরুল আলম বাদী হয়ে এ ঘটনার সঙ্গে  জড়িত শরীফ, শরীফের সহযোগী মিন্টু খান ও  মিন্টুর মা বিউটি বেগমের বিরুদ্ধে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

২৫ আগস্ট এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

** রাকিব-রাজন হত্যা মামলার রায় বেলা ১২টায়

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৫
এমআরএম/টিআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।