ঢাকা, সোমবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

রাজন হত্যার রায়

কঠোর নিরাপত্তায় সিলেটের আদালতপাড়া, জনতার ভিড়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০১৫
কঠোর নিরাপত্তায় সিলেটের আদালতপাড়া, জনতার ভিড় ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিলেট: আলোচিত শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলার রায় ঘোষণা উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তায় রয়েছে সিলেট আদালতপাড়া। আলোচিত এ হত্যা মামলার রায়কে কেন্দ্র করে আদালত প্রাঙ্গনে রয়েছে উৎসুক জনতার ভিড়ও।



বিচার শুরুর পর ১৬ কার্যদিবসের মধ্যে রোববার(০৮ নভেম্বর) এ মামলার রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে। সিলেট মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধা রায় ঘোষণা করবেন।

সকাল থেকে বাড়তি নিরাপত্তায় পোশাকে-সাদা পোশাকে বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে।

এরই মধ্যে রাজনের মা লুবনা বেগমকে নিয়ে আদালতে এসে পৌঁছেছেন বাবা আজিজুল রহমান আলম। বাদী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরাও আদালতে উপস্থিত হয়েছেন।

মামলার ১৩ আসামির মধ্যে কামরুলসহ ১১ জন কারাগারে আটক ও দু’জন পলাতক রয়েছেন। কারাগারে রয়েছেন মামলার চার্জশিটভুক্ত ১১ আসামি- মহানগরীর জালালাবাদ থানার কুমারগাঁও এলাকার শেখপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে কামরুল ইসলাম (২৪), তার সহোদর মুহিত আলম (৩২) ও আলী হায়দার ওরফে আলী (৩৪), চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়না (৪৫), হত্যাকাণ্ডের ভিডিওচিত্র ধারণকারী নূর আহমদ ওরফে নুর মিয়া (২০), দুলাল আহমদ (৩০), আয়াজ আলী (৪৫), তাজ উদ্দিন বাদল (২৮), ফিরোজ মিয়া (৫০), আছমত আলী (৪২) ও রুহুল আমিন (২৫)। আর পলাতক রয়েছেন শামীম ও পাভেল।

আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়েছে উল্লেখ করে সিলেট মহানগর পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি-প্রসিকিউশন) আব্দুল আহাদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আলোচিত এ হত্যা মামলার রায়কে কেন্দ্র করে আদালতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। অর্ধশতাধিক বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।

সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মফুর আলী বাংলানিউজকে বলেন, বেলা ১২টার পরে রায় ঘোষণা করা হতে পারে।  

গত ০৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে রাজনকে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। নিহত রাজন সদর উপজেলার কান্দিরগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামের আজিজুল ইসলাম আলমের ছেলে।

নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের পর মরদেহ গুম করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক হন কামরুলের ভাই মুহিত আলম। হত্যাকারীরা নির্যাতনের ২৮ মিনিটের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে দেশে-বিদেশে নিন্দার ঝড় ওঠে। খুনিদের ফাঁসির দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠে জনতা।

রাজন হত্যাকাণ্ডের পর মহানগরীর জালালাবাদ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাদী হয়ে মুহিত আলমসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে গিয়ে হত্যাকারীদের সঙ্গে আর্থিক সমঝোতার অভিযোগে বরখাস্ত হন জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন, এসআই জাকির হোসেন ও আমিনুল ইসলাম।

গত ১৬ আগস্ট সৌদি আরবে আটক কামরুল ইসলামসহ ১৩ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ হত্যা মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর সুরঞ্জিত তালুকদার।

গত ০৭ সেপ্টেম্বর মামলাটি বিচারের জন্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের বিচারক সাহেদুল করিম।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর এ আদালতে মামলার প্রথম শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গত ২২ সেপ্টেম্বর আদালতের বিচারক চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায়  সৌদি আরবে আটক কামরুলসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় অভিযোগ (চার্জ) গঠন করে বিচার কার্যক্রম শুরু করেন।

গত ০১ থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ১০ কার্যদিবসে মোট ৩৬ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। কামরুলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ অক্টোবর ১১ জন সাক্ষী ফের সাক্ষ্য দেন তার উপস্থিতিতে। ২৫ অক্টোবর এ মামলায় ৩৪২ ধারায় আসামিদের মতামত গ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শুরু হয়।  

গত ২৭ অক্টোবর তিন কার্যদিবসে মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আসামিদের উপস্থিতিতে ০৮ নভেম্বর রায়ের দিন নির্ধারণ করেন আদালতের বিচারক।

নির্মম এ হত্যাকাণ্ডের পর মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলাম পালিয়ে সৌদি আরবে চলে যান। সেখানে গিয়েও তার শেষ রক্ষা হয়নি। প্রবাসীরা তাকে ধরে বাংলাদেশ দূতাবাসে হন্তান্তর করেন। পুলিশ সৌদি আরবে গিয়ে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গত ১৫ অক্টোবর তাকে দেশে নিয়ে আসে।

‍আসামিদের মধ্যে গ্রেফতারকৃত কামরুল, তাজ উদ্দিন বাদল ও রুহুল আমিন ছাড়া অন্য ৮ জন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

** রাকিব-রাজন হত্যা মামলার রায় বেলা ১২টায়

বাংলাদেশ সময়: ১১২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৫
এনইউ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।