ঢাকা, সোমবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

দেশের মানুষের মর্যাদাবোধ ফিরে এসেছে, এটাই বড় অর্জন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৬
দেশের মানুষের মর্যাদাবোধ ফিরে এসেছে, এটাই বড় অর্জন

ঢাকা: ‘গত সাত বছরে দেশকে একটি মর্যাদার আসনে এনে দিতে পেরেছি, দেশের মানুষের ভেতর মর্যাদাবোধ তৈরি করে দিতে পেরেছি, এটাই আমাদের বড় অর্জন। ’ এ কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একুশে পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে পদকপ্রাপ্তদের হাতে তাদের সম্মাননা তুলে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি আশা করি আপনাদের মাধ্যমে দেশের মর্যাদা আরও বাড়বে। ভবিষ্যত প্রজন্ম উজ্জীবিত হবে।

শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা দেশের মানুষের মধ্যে মর্যাদাবোধ ফিরিয়ে আনতে পেরেছি, তাদের আত্মবিশ্বাসও ফিরে এসেছে। আমরা এখন মাথা উঁচু করে চলতে পারি। এ সব একুশ আমাদের শিখিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিকে ধংস করার চেষ্টা করা হয়েছিলো ভাষার উপর আঘাত করে। এ সময় পাকিস্তানিরা আমাদের উপর উর্দু ভাষা চাপিয়ে দিতে চেয়েছিলো। কিন্তু আমাদের দেশের ভাষা সৈনিকরা তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে সে মাতৃভাষা অর্জন করেছিলেন।   আজ আমরা মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারছি।

৫২’র ভাষা আন্দোলন আর একুশে ফেব্রুয়ারির শহীদদের কথা স্মরণ করার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ১৯৪৮ সালে মায়ের ভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা চেয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সে সময়ের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‍ গৌরবোজ্জ্বল ও প্রশংসনীয় অবদান রাখায় ১৬ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে একুশে পদক তুলে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে থাকতে চাই। আর সে লক্ষ্য সামনে নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

এবছর একুশে পদকে ভূষিত হলেন, ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, ডা. সাইদ হায়দার ও ড. জসীম উদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া (মরণোত্তর)।
 
শিল্পকলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য অভিনেত্রী জাহানারা আহমেদ, শাস্ত্রীয় সংগীতগুরু পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী, সংগীত শিল্পী শাহীন সামাদ, নৃত্যশিল্পী আমানুল হক ও চিত্রশিল্পী কাজী আনোয়ার হোসেন (মরণোত্তর)।
 
মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য একুশে পদক পেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি মফিদুল হক। আর সাংবাদিকতায় এ পদক পেয়েছেন প্রবীণ সাংবাদিক তোয়াব খান।
 
গবেষণায় বিশেষ অবদান রাখায় অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ এবং মংছেন চীং মংছিন। আর ভাষা ও সাহিত্যে জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ ও হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে আজ অনেকেই আছেন যাদের আমরা মূল্যায়ন করতে পারছি না। তাদের ও আপনাদের মূল্যায়ন এই পুরস্কারের মধ্য দিয়ে হয়না। আমরা চাই আপনাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে যাতে ভবিষ্যত প্রজন্ম সঠিক পথে চলতে পারে।

প্রতিনিয়ত মাতৃভাষা হারিয়ে যাচ্ছে এমনটি জানিয়ে চেতনায় মাতৃভাষাকে ধারন করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, মাতৃভাষা হারিয়ে যাচ্ছে জীবনের প্রয়োজনে। মানুষ তাদের দৈনন্দিন জীবনে সবার সঙ্গে কথা বলতে অন্য ভাষাকে বেছে নিচ্ছে। কিন্তু মাতৃভাষাকে আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। আমাদের যেমন অন্য ভাষায় শিক্ষা নিতে হবে তেমনি নিজেদের মাতৃভাষাতেও চর্চা করতে হবে। কারণ নিজেদের মাতৃভাষা ছাড়া প্রকৃত শিক্ষা হয় না।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।


বাংলাদেশ সময় ১২২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৬
এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।