সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে মহানগরীর ১৭ ইউসুফ রোঁ বড় মির্জাপুর হোল্ডিয়ের কোচিংয়ের ভবনে এ পতাকা উড়তে দেখা যায়। ২১ ফেব্রুয়ারি কোচিং বন্ধ থাকবে বলে আগের দিন রাতে দায়সারাভাবে জাতীয় পতাকা টানানো হয়েছে সেখানে।
সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জাতীয় পতাকা উত্তোলনের নিয়ম থাকলেও সেটির ব্যত্যয় ঘটিয়ে রাতের আঁধারে এ প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা ওড়ানোর মতো কাণ্ডে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা অভিযোগ করে বলছেন, গত কয়েক বছরে কোচিং বাণিজ্য করে কোটিপতি বনে গেছেন সেন্টারটির পরিচালক শ্যামা প্রসাদ রায় ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্যামল কুমার রায়। তাদের এ কাণ্ডের জন্য আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
স্থানীয়রা জানান, কোচিংটি ২১ ফেব্রুয়ারি বন্ধ ঘোষণা করেছে। সেদিন কেউ আসবেন না। যে কারণে ২০ ফেব্রুয়ারি রাতেই কোচিং কর্তৃপক্ষ পরের দিনের বেলায় লোক দেখাতে পতাকা টানিয়ে বাসায় চলে গেছেন। মূল সড়কের পাশেই অবস্থিত এ কোচিংয়ে রোড লাইট ও ভবনের আলোতে পতাকা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনাও করেছেন স্থানীয়রা।
পথচারী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, জাতীয় পতাকা আমাদের অস্তিত্বের স্বরূপ। এটির কোনো রূপ অবমাননা সহ্য করা যায় না।
তার মতে, কোচিং কর্তৃপক্ষ রাতে পতাকা টানিয়ে জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছে। শহীদের রক্তকে অপমান করেছে।
এ বিষয়ে শিক্ষাসাগরের পরিচালক শ্যামা প্রসাদ রায় রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে বাংলানিউজকে বলেন, না, না সকালে টানানোর কথা। কোচিংয়ে একটা ছেলে আছে ও কী করেছে খোঁজ নিয়ে দেখছি।
যদিও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কোচিং পরিচালক নিজে উপস্থিত থেকে রাতে পতাকা টানিয়েছেন। এ বিষয়ে খুলনা জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান বাংলানিউজকে বলেন, আইনে বলা আছে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পতাকা টানানো যাবে। কোচিংটি রাতে জাতীয় পতাকা টানিয়ে আইন ভঙ্গ করে পতাকার অবমাননা করেছে। কর্তৃপক্ষকে ধরে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষাসাগর কোচিং শুরু করে ২০০৬ সালে। তখন শিক্ষানিকেতন কোচিং থেকে ৪ জন শিক্ষক বাগিয়ে নিয়ে আসেন শিক্ষাসাগরের পরিচালক শ্যামা প্রসাদ রায়। পরবর্তীতে তাদের আবার বিভিন্ন কৌশলে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে এই কোচিংয়ে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষকরা বেশি দিন থাকার কারণে তাদের বেতন বেশি হয়ে যেতে থাকলে কোচিং থেকে বাদ দেওয়া হয়। এই তালিকায় আছেন- উজ্জল রায়, প্রাঞ্জল রায়, পলাশ রায়, ইত্যাদি। সবশেষ এই তালিকায় যোগ হন গৃহকর্মী দূর্গা বিশ্বাস। এছাড়াও কোচিংটির বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। আবাসিক এলাকার মধ্যে কোচিং করায় বড় মির্জাপুরে দিন-রাত যানজট লেগেই থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৬
এমআরএম/এইচএ/