বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য একগুচ্ছ প্রকল্পে অর্থায়ন করতে ভারত চতুর্থ লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) আওতায় প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার ঋণের ঘোষণা দিতে পারে।
আগামী এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে যাবেন। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব ড. সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝটিকা সফরে ঢাকা এসে বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারপরই ভারত সফরের দিনক্ষণ জানান প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেসসচিব এম নজরুল ইসলাম।
প্রধানমন্ত্রীকে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির আমন্ত্রণ পৌঁছে দেন ড. সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর। এতে আগামী সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে থাকবেন। যা বাংলাদেশের কোনো প্রধানমন্ত্রীর জন্য ভারতের রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে প্রথমবারের মতো এমন সম্মান জানানো হচ্ছে।
পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকের আমন্ত্রণে দ্বি-পক্ষীয় বৈঠকে অংশ নিতে ড. সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর ঢাকায় আসলেও তার সফরের মূল বিষয় ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগামী ভারত সফরের সময়সূচি এবং আলোচ্য বিষয় ঠিক করা। সন্ধ্যায় দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব দ্বি-পক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন।
বৈঠক শেষে রাত ১১টায় পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, এই বৈঠকটি ছিল প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের এজেন্ডা সেটিংয়ের। আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি, মিলিটারি কো অপারেশন, তিস্তা পানিবন্টন, বর্ডার কিলিং বন্ধ ও গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্প নিয়ে এ বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
পুরো বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সফর অত্যন্ত সফল হবে বলেও আশা করছেন পররাষ্ট্র সচিব।
এছাড়া তিস্তা পানিবন্টন চুক্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে আশাবাদী।
শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে দিল্লির উদ্দেশে তার ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ড. সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর দ্বিপক্ষীয় সব বিষয়ে ভারত সরকারের মনোভাব তুলে ধরেন। বিশেষ করে তিস্তার পানি ইস্যুতে দিল্লির বার্তা পৌঁছে দেন তিনি।
তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর করতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ইচ্ছা থাকলেও এ বিষয়ে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিকে সংশ্লিষ্ট করার বাস্তবতা তুলে ধরেন তিনি। এ জন্য দরকার একটু সময়।
বৈঠকে আলোচনায় গঙ্গা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের জন্য একটি কারিগরি কমিটি গঠন করার প্রসঙ্গ উঠে আসে। ওই কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের পর বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের উন্নয়নে ভারত চতুর্থ কিস্তির এলওসি ঋণের ঘোষণা দেবে।
বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক একটি সহযোগিতা চুক্তির জন্য সম্মত হয়েছে দুই পররাষ্ট্র সচিব। প্রধানমন্ত্রীর সফরে এ চুক্তিটি স্বাক্ষর করার সম্ভাবনা রয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, অবকাঠামো উন্নয়ন, অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন, সড়ক ও রেলযোগাযোগ উন্নয়নসহ একাধিক খাতের কমবেশি ২০টি উন্নয়ন প্রকল্পের একটি তালিকা দিয়েছে ঢাকা।
**এপ্রিলের প্রথমার্ধে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর
** ভারতের পররাষ্ট্রসচিব জয়শঙ্কর ঢাকায়
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৭
কেজেড/টিআই/এসআই