বাহাদুর লেন নাম হলেও এ গলিটিকে সবাই ভূতের গলি বলেই চেনে, আর বাড়িটিকে ভূতের বাড়ি।
এ গলিতে নতুন, পুরাতন অনেক বাড়ি থাকলেও অন্ধকারে ডুবে আছে ভেতরটা।
![ভূতের বাড়ি/ছবি: মানজারুল ইসলাম-বাংলানিউজ](http://www.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/asm-120170419015101.jpg)
ফিরে আসতে হলো আনসার ক্যাম্পের গেটে। গেট দিয়ে প্রবেশ করেই অনুমতি নিয়ে ভূতের বাড়ির দিকে পা বাড়ানো। কয়েক পা হাঁটলেই দক্ষিণ দিকে পুরনো দোতলা ভবন (ভূতের বাড়ি)। বাইরে আলো থাকলেও ভেতরটা ঝিমধরা অন্ধকার।
![ভূতের বাড়ি/ছবি: মানজারুল ইসলাম-বাংলানিউজ](http://www.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/Khulna-Vuter-620170419015148.jpg)
ষাটের দশকে এই ভূতের বাড়িতে খুলনা জেলা আনসার কার্যালয় করা হয়। তখন এটি সংস্কার করা হয়েছিল। এক পর্যায়ে এ বাড়ির পাশে নতুন অফিস ভবন তৈরি হয়। তখন ভূতের বাড়ি থেকে অফিসটি স্থানান্তরিত করা হয় বলে জানান আনসার সদস্যরা।
![ভূতের বাড়ি/ছবি: মানজারুল ইসলাম-বাংলানিউজ](http://www.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/Khulna-Vuter-520170419015224.jpg)
![ভূতের বাড়ি/ছবি: মানজারুল ইসলাম-বাংলানিউজ](http://www.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/Khulna-Vuter-820170419015300.jpg)
এছাড়া জনশ্রুতি রয়েছে নাটোরের দীঘাপতিয়া রাজপরিবারের প্রতিষ্ঠাতা রাজা দয়ারাম ১৭১৪ সালে খুলনা ও যশোরের অনেক জমি দখল করেন। আর রাজা দয়ারামের বোনের মেয়ে ছিলেন শীলা। শীলা খুবই সুন্দরী ছিলেন। তার মামাবাড়িতে অবস্থানকালে রাজবাড়িতে অনুষ্ঠিত যাত্রা দেখতে গিয়ে অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়ে প্রেমে পড়েন নিশিকান্ত নামের এক যাত্রাশিল্পীর। গোপনে তারা অভিসারে বের হতেন। এমনই চলতে থাকে।
একদিন তারা পালানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ধরা পড়ে যান দয়ারামের কর্মচারীর কাছে। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে দায়ারাম শীলাকে বিয়ে দেন নিধুরাম নামে এক যুবকের সঙ্গে। একপর্যায় তাদের খুলনায় পাঠিয়ে দেন এবং আশ্রয় হয় এই বাড়িতে। শীলা এই বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। নিধুরামকে কখনও স্পর্শও করতে দেননি। একসময়ে শীলা আত্মহত্যা করেন। একই সময় নিধুরামও। সেই থেকে কখনও নারীকণ্ঠে হাসির শব্দ, আবার কখনও ছায়ামূর্তি দেখা যায় এ বাড়িতে। আর এখান থেকেই ভৌতিক গল্পের শুরু।
আবার কারও কারও মতে, বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন জনৈক দীননাথ সিংহ। তিনি ছিলেন কুখ্যাত নীলকর উইলিয়াম রেনির অন্যতম সহযোগী। পাকিস্তান আমলে জনৈক মোক্তার এ বাড়িতে বসবাস করতে আসেন। তার এক ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে বাড়িতে মারা যান। এরপর গোলাম জব্বার নামের এক ডাক্তার এ বাড়িতে বাস করতে এলে তার এক চাকরও গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। সাধারণ লোকের ধারণা, এগুলো সব নাকি ভূতের কাজ।
এ বাড়িটিতে এতো ঘটনা ঘটে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের কাছে ভবনটি ভীতিকর ও রহস্যময়। ভয়ের হলেও ভূত নিয়ে কৌতূহলী অনেকেই এ বাড়িটি দেখতে আসেন বলে জানান আনসার ক্যাম্পে রাতে দায়িত্বরত আনসার সদস্য আব্দুল মতিন।
আপনি নিজে ভূত দেখেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি হেসে উড়িয়ে দেন।
বাংলাদেশ সময়: ০১৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৭
এমআরএম/এএ
**জীবনচক্র তাদের আহ্নিক গতির পাল্টাসূত্রে