প্রায় দু'মাস ধরে সদর উপজেলার পাঁচঠাকুরী-খুদবান্দি যমুনার পশ্চিম তীর সংরক্ষণ বাঁধের বাহুকা টুটুলের মোড় পয়েন্টে ভাঙন অব্যাহত থাকায় তীরবর্তী এলাকার মানুষের মাঝে এ আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে সরেজমিন ওই এলাকায় গেলে এলাকাবাসী জানায় তাদের আশঙ্কার কথা।
সদর উপজেলার বাহুকা গ্রামের বৃদ্ধ শুকুর আলী, মৎস্যজীবী রনজিত দাস, কৃষক আব্দুল কাদের, টুটুলের মোড় এলাকার মাঙন আলী দিনমজুর মো জহির উদ্দিন, আবু সাইদসহ বাঁধটির পশ্চিমে বসবাসরত মানুষেরা বলেন, গত দুই মাসের ব্যবধানে পাউবোর নদী সংরক্ষণ বাঁধের পূর্বদিকে চর বাহুকা গ্রামটি সম্পূর্ণ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এছাড়া টুটল মোড়, বাহুকা ও শুভগাছা এলাকার প্রায় তিন শতাধিক বাড়িঘর নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে যে কোনো সময় পাউবোর বাঁধটি ভেঙে বাহুকা, শুভগাছা, বেড়ের চর, চিলগাছা, রতনাকান্দি, খুকশিয়া, গজাড়িয়া, সড়াতৈলসহ প্রায় ১০টি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। শুভগাছা গ্রামের আফসার মণ্ডল, শাহাদত উল্লাহ টুটুল, জাহাঙ্গীর আলম, রুবিয়া খাতুন ও প্রকাশ দাস বলেন, ইতোমধ্যে টুটুলের মোড় অঞ্চলে বাঁধটিতে ভাঙন ধরেছে। প্রায় ২শ' মিটার এলাকাজুড়ে চলছে ভাঙন। আমরা ভয়ে ভয়ে দিন পার করছি। অনেকেই অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য নতুন আশ্রয়স্থল খুঁজে চলেছেন।
অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক সোহরাব আলী মাস্টার জানান, দু’মাস ধরে ভাঙন অব্যাহত থাকলেও পাউবোর কর্মকর্তারা এখনো কোনো ব্যবস্থা নেননি। ফলে এ এলাকার অসহায় মানুষগুলো রয়েছেন দুশ্চিন্তায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার জানান, আসামে প্রচুর বৃস্টিপাতের কারণে বেশ কয়েকদিন ধরে যমুনায় পানি বৃদ্ধি পায়। আর তখন থেকে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। তবে ভাঙনের তীব্রতা কম রয়েছে। ভাঙন যেন বৃদ্ধি না পায় সেজন্য শুক্রবার সকাল থেকে বাঁধে জিওব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রোকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম জানান, বাহুকা থেকে খুদবান্দি ও কাজিপুরের মেঘাই এলাকা মিলে ৮ কিলোমিটার নদী তীর রক্ষা বাঁধের একটি প্রকল্প ইতোমধ্যে প্রি-একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। একনেকে প্রকল্পটি অনুমোনের অপেক্ষায় রয়েছে। ওই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নদীভাঙন থেকে রক্ষা পাবে এলাকাবাসী।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৭
আরএ