রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালত প্রাঙ্গণে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী কমিটির অভিষেক ও নতুন ডিজিটাল বার ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক একথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ওইসময় বিচারপতিরা তার (সুরেন্দ্র কুমার সিনহা) উপর অনাস্থা দিলে ও দুর্নীতির অভিযোগে তার সঙ্গে কাজ করতে না চাইলে তিনি নিজেই পদত্যাগ করেছেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের সময় থাকবে নির্বাচনকালীন সরকার। নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন। আমরা নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করবো। আমরা একথাও শুনেছি কিছু লোক বলেছেন, নির্বাচন হবে না। আমি আপনাদের বলে দিতে চাই, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে যখন এই সংসদের শেষ তার ৯০ দিন আগে সংবিধানে যে নির্বাচনের কথা বলা আছে ডিসেম্বর মাসে সেই নির্বাচন হবে এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সে নির্বাচনে অংশ নেবে।
তিনি বলেন, অনেকেই বলছেন বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই। আমি তাদের বলে দিতে চাই, ২১ বছর বঙ্গবন্ধুর রায় হয়নি, বিচারপতির ৬৫ বছরকে ৬৭ বছর বানিয়েছে বিএনপি। এখন বিচার বিভাগ স্বাধীন। যুদ্ধপরাধের বিচার হয়েছে, বিভিন্ন হত্যা মামলার বিচার হচ্ছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটরদের (এপিপি) বেতন বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাবনা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ জন্য বছরে ২৭০ কোটি টাকা লাগবে। আর নারায়ণগঞ্জের বার ভবনের জন্য পিডিবি আর এনবিআরের সঙ্গে কথা হয়েছে।
তিনি বলেন, দুই আদালত একসঙ্গে রাখার ব্যাপারে অনেক জেলাতেই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এক আদালত থেকে আরেক আদালতে যাওয়ার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এই সমস্যার সমাধান দ্রুত করার চেষ্টা করবো এবং দুই কোর্ট একসঙ্গে রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে। আগামী নির্বাচনের আগেই এটি সম্পন্ন করা হবে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েলের সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হোসনে আরা বাবলী, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু সালেহ শেখ মোহাম্মদ জহিরুল হক, যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আনিসুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আতিফ বিন কাদের, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওয়াজেদ আলী খোকন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মহসীন মিয়া প্রমুখ।
এদিকে আইনজীবী সমিতির নতুন কমিটির অভিষেক হলেও অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন বিএনপিপন্থী সমিতির নির্বাচিত ১১ আইনজীবী।
আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের নেতৃত্বে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা এ অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন।
অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান জানান, বিচার বিভাগকে স্বাধীনভাবে পরিচালিত হতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা নিম্ন আদালতে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত। জামিনযোগ্য মামলা হলেও খালেদা জিয়াকে জামিন দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের একের পর এক গায়েবি ও মিথ্যা মামলায়ও নিম্ন আদালতে জামিন দেওয়া হচ্ছে না বরং একের পর এক রিমান্ড দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং এই অনুষ্ঠান আমরা বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বাংলাদেশ সময়: ২১০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৮
আরআর