ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কুষ্টিয়া রাইফেল ক্লাবের সামনে ঠিকাদারকে প্রকাশ্যে হাতুড়িপেটা

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০২১
কুষ্টিয়া রাইফেল ক্লাবের সামনে ঠিকাদারকে প্রকাশ্যে হাতুড়িপেটা

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়া শহরের রাইফেল ক্লাবের সামনে প্রকাশ্যে এক ঠিকাদারকে হাতুড়িপেটা করেছে দুর্বৃত্তরা।

সোমবার (০২ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার পর কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে।

 

হামলার শিকার ঠিকাদারের নাম শহিদুর রহমান মিন্টু। তার বাড়ি জেলার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের শানপুকুরিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম আহম্মদ আলী বিশ্বাস।

ঘটনার সময় সড়কে লোকজনের উপস্থিতি ছিলো। অনেকেই হামলার দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও করেছেন। ভয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হতে পারেননি মিন্টু। পরে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছেন তিনি। থানায় অভিযোগ করতেও ভয় পাচ্ছেন এই ঠিকাদার।

ঠিকাদার শহিদুর রহমান মিন্টু বলেন, আমি প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করি। দুই মাস আগে মিরপুর উপজেলায় সড়কের ৭ কোটি টাকার একটি টেন্ডার ছিলো। আমি টেন্ডারে অংশ নিই। টেন্ডারে অংশ নেওয়ার আগে থেকে আমি যে এ কাজে শিলিউল ক্রয় না করি এবং ড্রপিং না করি এজন্য কয়েকজন নেতা আমাকে হুমকি দেন। টেন্ডারে অংশ নিয়ে লটারিতে আমি কাজটি পাইনি। তবে অংশ নেওয়ার কারণে আমাকে ফোনে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে আসছিলো ক্ষমতাসীন দলের বেশ কয়েকজন নেতা। তারা আমাকে দেখে নেবে বলে হুমকি দেন।

তিনি জানান, বেলা ১২টার দিকে ব্যক্তিগত কাজে শহরে আসি। কাজ শেষে রাইফেল ক্লাব এলাকায় একটি দোকানে বসে চা পান করছিলাম। তখন হঠাৎ করেই ১০ থেকে ১৫ জন ব্যক্তি হাতুড়িসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাকে ঘিরে ধরে। তাদের বেশিরভাগের হাতে হাতুড়ি ছিলো। তারা ধরে আমার দুই পায়ের হাঁটুতে হাতুড়ি দিয়ে মারতে শুরু করে। এরপর আমি জীবন বাঁচতে সেখান থেকে দৌঁড় দিই। তারপরও আমাকে তারা তাড়া করে পেটাতে থাকে শরীরের নানা স্থানে। সড়কসহ আশেপাশে লোকজন থাকলেও তারা ভয়ে কেউ এগিয়ে আসতে সাহস পাইনি। আমার হাঁটু থেঁতলে গেছে। পিঠে ও বুকেও লেগেছে।

স্থানীয় লোকজনের ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মিন্টুকে ঘিরে ধরে হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন কয়েকজন। তিনি দুই হাত দিয়ে আঘাত ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। তারপরও তার ওপর মারধর করা হচ্ছে। এক পর্যায়ে তিনি দৌঁড় দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তার পিছু নেই দুইজন। একজনের লুঙ্গি পরা ছিলো। তার বাড়ি মজমপুর সাদ্দামবাজার এলাকায়। আরো একজনের প্যান্ট ও শার্ট পরা ছিলো। তার মুখে মাস্ক ছিলো। এ দুইজনের সঙ্গে আরো ১০-১৫ জন যুবক হামলায় অংশ নেয়।

শহিদুর অভিযোগ করে বলেন, ‘এ দেশে কোনো বিচার নেই। নিরাপত্তার কারণে হাসপাতালেও যেতে পারেনি। যারা হামলা করেছে তারা হাসপাতাল এলাকার। কোনো রকমে চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধ নিয়ে বাড়িতে এসেছি। তারা আমার লাইফ শেষ করে দিয়েছে। দুই হাটুঁতে বেদম মেরেছে। মামলা করবো কাদের নামে। এরা দেশ চালায়। মামলা করে টিতে থাকতে পারবো না। আর পুলিশ তাদের কেনা। ’

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এমন হামলার কথা আমার কানে আসেনি। হামলা বা মারপিটের বিষয়ে থানায় কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে দোষিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।