কুড়িগ্রাম: বর্ষা মৌসুমে বন্যা না হলেও বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মারাত্মক ভাঙন দেখা দিয়েছে কুড়িগ্রামের তিস্তা নদীতে। ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ব্রহ্মপুত্র-ধরলা-তিস্তা অববাহিকার মানুষ।
তিস্তা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে গত একমাসে উলিপুর, রাজারহাট ও চিলমারী উপজেলার অন্তত ৩০টি পয়েন্টে পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি ও আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদসহ সরকারি-বেসরকারি অনেক স্থাপনা।
ভাঙন অব্যাহত থাকার পরও সরকারি কোনো পদক্ষেপ না থাকায় হতাশা বিরাজ করছে নদীপাড়ে বসবাসকারীদের মধ্যে। বিভিন্ন স্থাপনাসহ তিস্তা পাড়ের মানুষের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।
থেতরাই ইউনিয়নের গোড়াইপিয়ার এলাকার আমেনা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, তিস্তার ওই পাড়ে (পশ্চিম) আমার বাড়ি ছিল। নদী ভাঙার পরে এ পাড়ে বাড়ি করছিলাম, তাও নদীতে তলিয়ে গেছে। দিনমজুর স্বামীকে নিয়ে এখন কোথায় যাব জানি না। জমি, টাকা-পয়সা কিছু নেই যে একটু জায়গা কিনে বাড়ি করবো।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, তিস্তা নিয়ে সরকারের মহাপরিকল্পনার কারণে বর্তমানে ভাঙন রোধে কোনো প্রকল্প চলমান নেই। তিস্তার ভাঙন রোধে মেগা প্রকল্প অনুমোদন হলে কাজ শুরু হবে। তবে এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে জরুরিভিত্তিতে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা চলছে।
উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার বাংলানিউজকে জানান, গত একমাসে তার ইউনিয়নের গোড়াই পিয়ার এলাকার তিনটি ওয়ার্ডের মধ্যে দু’টি ওয়ার্ড তিস্তার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রায় ৮০টি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়, মাঠ ও খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে।
তিনি বলেন, অবিলম্বে যদি এ তিস্তার ভাঙন বন্ধ করা না হয় তাহলে এ বর্ষা মৌসুমে আরও অনেক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, আগষ্ট ১২, ২০২১
এফইএস/আরবি