ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘ওদের অভিজ্ঞতা নেই, লেখাপড়া করে আসেননি’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২২
‘ওদের অভিজ্ঞতা নেই, লেখাপড়া করে আসেননি’ কথা বলছেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

সিলেট: ‘ওদের অভিজ্ঞতা নেই, ওরা লেখাপড়া করে আসেননি’ বলে জেলা দুগ্ধ খামারের কর্মকর্তাদের ভর্ৎসনা করলেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি এক্সপার্ট লোক।

যখন পিএসসি পরীক্ষা নেয়, তখন একজন লোকও পাওয়া যায় না।

শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিলেট জেলা দুগ্ধ খামার পরিদর্শনকালে গবাদিপশুর প্রতি অযত্ন অবহেলা দেখে কর্মকর্তাদের প্রতি এমন মন্তব্য করে তিনি।

মন্ত্রী বলেন, এদের (গবাদিপশুর) স্বাস্থ্যের বিষয়ে অফিসাররা অমানবিক। শুধু চাকরিই দায়িত্ব নয়, অবলা প্রাণী কথা বলতে পারে না। তার কষ্টের কথা বলতে পারে না। এদের প্রতি যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন। এই শীতে গবাদিপশুগুলো পাকাতে খড়বিহীন রাখা হয়েছিল। তাছাড়া ইট সলিংয়ে কোনো বালু দেওয়া হয়নি। ফলে একটি পশুর পায়ের চামড়া ক্ষতিগ্রস্ত দেখতে পেয়ে পশুগুলোকে দেখভাল করা হয় কিনা মন্ত্রী জানতে চান।

প্রতি উত্তরে কর্মকর্তা বলেন- প্রতিদিন সকাল-বিকেল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি। তাৎক্ষণিক একটি গবাদি পশুর পায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখে মন্ত্রী জানতে চান। উত্তরে কর্মকতা বলেন, না স্যার-এটা আঘাতের চিহ্ন না! পাকাতে লেগে ছাল উঠে গেছে।

গবাদিপশু থাকার স্থান বালু দিয়ে উপযোগী না করার বিষয়ে জানতে চেয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা এখানে কত আগে কাজ শুরু করেছি? মন্ত্রী আসায় আপনাদের চোখে পড়লো না কেন? গবাদিপশু থাকার পাকাস্থানে বালু দেওয়া হয়নি কেন? তখন ওই কর্মকর্তা সপ্তাহের মধ্যেই বালু ফেলবেন, এমন প্রতিশ্রুতি দেন। মন্ত্রী বলেন, ‘আমি লোক লাগিয়ে রাখবো, কাজ করেছেন কিনা, দেখে যাবো। আমাকে রিপোর্ট দেবে।

এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, সিলেটের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। সেই গুরুত্বের একটি অংশ হিসেবে সিলেটে প্রাণী সম্পদ ইনস্টিটিউটের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে এসেছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ জনপদ সিলেট। সিলেটের মতো আর কোনো জেলার এত উন্নয়ন হয়নি। বিশেষ করে ঢাকা থেকে সিলেটগামী রাস্তার প্রকল্প একনেকে পাশের কথা তুলে ধরেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা, মানুষের বেকারত্ব দূর করা, কর্মজীবন এবং তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি জায়গা, উদ্যোক্তা তৈরি হওয়া এই জাতীয় আধুনিক দক্ষ জনবল এখান থেকে তৈরি হবে। আমি মনে করি এটা সিলেটের উন্নয়নে নবদিগন্তের সূচনা।

মৎস্যখাত ও প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে শেখ হাসিনা সরকার যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সারা দেশে এখন মাছ, মাংস, ডিম ও দুধের অভাবনীয় উৎপাদন বেড়েছে। যেসব অঞ্চলে যে জাতীয় সামগ্রী উৎপাদনের সুযোগ আছে, হাওর অঞ্চলে অন্যান্য জায়গায় নিশ্চয়ই সেখানে সে অনুযায়ী পরিকল্পনা নেবো।

তিনি বলেন, চিড়িয়াখানায় মারা যাওয়া প্রাণীদের একাধিক ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে-অবহেলায় নয়, সংক্রমণে এসব প্রাণী মারা গেছে।

সিলেটের ইকোপার্কে জেব্রার মৃত্যু জীবাণু সংক্রমণে হয়েছে। এছাড়া বিড়াল প্রজাতির প্রাণীও বিভিন্নভাবে সংক্রমিত হচ্ছে। অবশ্য সব প্রাণীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার কাজ করছে উল্লেখ করেন তিনি।

সিলেট সফরকালে বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শনকালে মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এস এম ফেরদৌস আলম, প্রাণিসম্পদ দপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক ড. অমলেন্দু ঘোষ, সিলেট আইএলএসটি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম ও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রুস্তম আলী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২২
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।