ঢাকা, বুধবার, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ০৩ জুলাই ২০২৪, ২৫ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

যেভাবে ঘটে বাস-লেগুনার সংঘর্ষ

মিরাজ মাহবুব ইফতি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০২২
যেভাবে ঘটে বাস-লেগুনার সংঘর্ষ

ঢাকা: রাজধানীর মিরপুর বেড়িবাঁধে বাস ও লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরও পাঁচজন আহত হয়েছেন।

তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রত্যক্ষদোষীরা বলছেন, বেড়িবাঁধে সড়কটি প্রশস্ত না হওয়ায় ওভারটেকিংয়ের কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। সড়কটিতে নেই ডিভাইডার ও স্পিড ব্রেকার। নবাবেরবাগ পাকার মাথার তিন সড়কের মোড়ে দু-একদিন পরেই হচ্ছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

এর আগে রোববার (৩১ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বর বেড়িবাঁধ নবাবেরবাগ পাকার মাথায় পিকআপ ভ্যান স্ট্যান্ডে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনায় মৃত তিনজন হলেন- ঢাকা কর্মাস কলেজের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহম্মেদ সিয়াম (১৮), ভাঙারি ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম রুবেল (৩০) ও ঠিকাদার মিলন গাজী (৪৫)।

প্রত্যক্ষদর্শী হাসান বলেন, রোববার দুপুর ২টার দিকে মিরপুর ১ নম্বর থেকে আসছিল কিরণমালা পরিবহনের একটি বাস আর লেগুনা আসছিল আকরাইনের (আশুলিয়া) দিক থেকে। লেগুনাটি ২০ ফুট সড়কের ৮০ শতাংশ ডান পাশের চেপে চলছিল। সড়কের বাম পাশে মাত্র ২০ শতাংশ রাখা হয়েছিল বাসটি যাতায়াতের জন্য। তেমন জায়গা ছিল না বাসের জন্য। এ কারণেই বাস-লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।  

তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনা হওয়ার পরপরই প্রথমে আমরা লেগুনা চালককে উদ্ধার করি। লেগুনার পেছনে তাকিয়ে দেখি মানুষের রক্তের বন্যা বয়ে যাচ্ছিল। সেখানে আট থেকে ১০ জন মানুষ ছিল। তারা কেউ সুস্থ ছিল না, সবাই কম বেশি আহত হয়েছেন। পরে তাদের উদ্ধার করে পিকআপ ভ্যানে করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি।

স্থানীয় বাসিন্দা সুমন বলেন, দুর্ঘটনায় সম্পূর্ণ দোষ ছিল লেগুনা চালকের। এ সড়কে বেপরোয়াভাবে চলাচল করে লেগুনগুলো। প্রায় সব লেগুনা চালকরা অপ্রাপ্তবয়স্ক। এদের কারও ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই।  

অভিযোগ করে সুমন বলেন, ঘটনাস্থলে শাহআলী থানা থেকে পুলিশ আসতে সময় নিয়েছে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ মিনিট। পুলিশ এসে আহতদের কাউকে পাইনি। পরে তারা লেগুনা ও বাস থানায় নিয়ে যায়।  

সরেজমিনে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা যায়, বেড়িবাঁধ সড়কটি প্রশস্ত মাত্র ২০ ফুট। নেই কোনো সড়ক ডিভাইডার। মিরপুর ১ নম্বর বেড়িবাঁধ নবাবেরবাগ পাকার মাথার মসজিদ সংলগ্ন ৩ সড়কের মোড়ে নেই কোনো স্পিড বেকার। স্থানীয়রা বলছেন, এ মোড়ে স্পিড বেকার না থাকায় দু-একদিন পর পরই হচ্ছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। সংশ্লিষ্ট কেউ নিচ্ছে না কোনো ব্যবস্থা।

বাস ও লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় সোমবার (১ আগস্ট) সকালে শাহ আলী থানায় নিহত মিলন গাজীর ছোট ভাই রুবেল গাজী বাদী হয়ে মামলা করেন।  

আসামিরা হলেন- বাসচালক তুষার (২২) ও অজ্ঞাতনামা হেলপার।  

নিহত মিলন গাজীর ছোট ভাই রুবেল গাজী বাংলানিউজকে বলেন, মামলা করেছি। আমার ভাইয়ের লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি যাচ্ছি। এ দুর্ঘটনায় জড়িত আসামিদের বিচার দাবি করছি।  

মিরপুর শাহ আলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, রুবেল গাজী বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আসামিরা পলাতক আছেন। তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১২১ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০২২
এমএমআই/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।