ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শিবির সন্দেহে ইবি শিক্ষার্থীকে মারধর

ইবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২
শিবির সন্দেহে ইবি শিক্ষার্থীকে মারধর

ইবি: শিবির সন্দেহে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দুই শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, অনুষদ ভবনের করিডরে বিশ্ববিদ্যালয় দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে ঘিরে ধরে শিবির সন্দেহে বিভিন্নভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন শাখা ছাত্রলীগের ৮-১০ জন নেতাকর্মী। একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাকে মারধর করতে থেকেন। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীকে কিল ঘুষি মারতে মারতে অনুষদ ভবনের সামনের গেট দিয়ে বের করে দেন।

পরবর্তীতে আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের আরও এক শিক্ষার্থীকে চড়-থাপ্পড় দেন। শিক্ষার্থী দৌড় দিলে ছাত্রলীগ কর্মীরা তার পেছনে ধাওয়া দেন। ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসি হয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান।

পরে ছাত্রলীগ কর্মীরা অনুষদ ভবনে পুনরায় প্রবেশ করে লাঠি হাতে মারমুখী ভঙ্গিতে সন্দেহভাজন শিবির কর্মী খুঁজতে থাকে। এসময় তারা শ্রেণীকক্ষের দরজায় লাথি ও ধাক্কা মারতে থাকে। ছাত্রলীগের এ কর্মকাণ্ডে আতঙ্কিত হয়ে এদিক সেদিক ছুটতে থাকে শিক্ষার্থীরা।

অনুষদ ভবন থেকে বের হয়ে ছাত্রদল-শিবিরের বিরূদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে প্রশাসন ভবনে প্রবেশ করে। প্রশাসন ভবনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের লাঠি হাতে শোডাউন দিতে দেখা গেছে।

ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী জানান, আমি পরীক্ষা শেষ করে বিভাগের (চতুর্থ তলায়) সামনে দাঁড়িয়ে গল্প করছিলাম। হঠাৎ কয়েকজন ডেকে আমাকে অনুষদের করিডরে নিয়ে আসে। এসময় তারা আমাকে শিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা বিভিন্ন ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে। শিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই বললে তারা আমার কাছ থেকে আমার বন্ধুর নাম্বার চান। তবে সে মুহূর্তে আমার বন্ধুর নাম্বার না থাকায় তাদের দিতে পারিনি।  

আর নাম্বার দিতে না পারায় তারা আমাকে ৮-১০ জন মিলে মারধর করেন। মারধর করে আমাকে অনুষদ ভবনের সামনের কলাপসিপল গেট দিয়ে বের করে দেন।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, 'অনুষদ ভবনে কয়েকজন শিক্ষার্থী অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে জড়ো হয়। এ খবর পেয়ে আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মী ঘটনাস্থলে গিয়ে শিবির সন্দেহে ধাওয়া করে। তবে মারধর করা হয়েছে কিনা এটা আমার জানা নেই। '

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, 'আমি শুনেছি। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। কেউ যদি কোনো অপরাধ করে থাকে সেটা আমাদের জানাক আমরা ব্যবস্থা নেব। কিন্তু এভাবে শিক্ষার্থীদের মারধর করাটা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। আগামীকাল বিষয়টি নিয়ে ছাত্রলীগ নেতারে সঙ্গে বসবো। '

বাংলাদেশ সময়: ০০৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।