ঢাকা, শনিবার, ১ আষাঢ় ১৪৩১, ১৫ জুন ২০২৪, ০৭ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

ঝড়ের রাতে এক হাসপাতালে ৭ শিশুর জন্ম

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২২
ঝড়ের রাতে এক হাসপাতালে ৭ শিশুর জন্ম

বাগেরহাট: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের দিনে একে একে আটজন সন্তান সম্ভাবা নারীরা এসে ভর্তি হন মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বিদ্যুৎ বিহীন এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোবাইল ও মোববাতির আলোয় সেদিন সাত শিশুর জন্ম হয়েছে।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাত ৩টা পর্যন্ত নরমাল ডেলিভারিতে এই সাত শিশুর জন্ম হয়। তবে শারীরিক জটিলতা থাকায় ভোর ৪টার দিকে সোনিয়া নামের এক সন্তান সম্ভাবা নারীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা।

ওই সন্তান জন্ম দেওয়া মায়েরা হলেন- মোংলা উপজেলার সিগনাল টাওয়ার এলাকার জাকির হাওলাদারের স্ত্রী মনিরা (৩৩), মাকোরঢোন এলাকার বাসিন্দা সোহাগ সরদারের স্ত্রী মুক্তা (১৯), আরাজী মাকোরঢোন এলাকার মেহেদী হাসানের স্ত্রী বনানী (১৯), বাঁশতলা এলাকার মাছুমের স্ত্রী নাঈমা (২০), নারকেলতলা এলাকার মজিবর হাওলাদারের স্ত্রী রাজিয়া (৩০), মালগাজী এলাকার মানিক শেখে স্ত্রী মিলা (২৬) ও ভাসানী সড়কের আবুল হোসেনের স্ত্রী শাহনাজ বেগম (৪২)। তারা সবাই সুস্থ আছেন। ঝড়ের রাতে এমন সেবা পেয়ে খুশি প্রসূতি মা ও তাদের স্বজনরা।

ঝড়ের রাতে সন্তান জন্ম দেওয়া মা শাহনাজ বেগম বলেন, রাতে ব্যাথা বাড়লে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে কোথায় যাব, কি করব এই ভেবে খুব ভয় পেয়েছিলাম। পরে অনেক কষ্ট করে হাসপাতালে গেলাম। হাসপাতালের ডাক্তারদের আন্তরিকতায় আমরা খুব খুশি হয়েছি।

এ রাতে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শাহীন, মেডিকেল অফিসার ডা. নুরজাহান নিশাত, মিডওয়াইফ আয়শাসহ সেবিকা ও অন্যান্য কর্মচারীরা দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

মেডিকেল অফিসার ডা. নুরজাহান নিশাত বলেন, অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিকভাবেই প্রসূতি মায়েদের সেবা দেওয়া হয়েছে। আমাদের এখানে বিদ্যুৎ ছিল না। ওই রাতে জরুরি সিজার করার মতো কোনো অবস্থা আমাদের ছিল না। তাই আমরা চেষ্টা করেছি মায়েদের সুস্থ্য রেখে স্বাভাবিক সন্তান প্রসব নিশ্চিত করতে। সবার সহযোগিতায় সাত জন মাকে এখানে নরমাল ডেলিভারি করাতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু সোনিয়া নামে এক সন্তান সম্ভাবা রোগীকে বাধ্য হয়ে ভোর ৪টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে হয়েছে। কারণ ওনার কিছু জটিলতা ছিল। সব মিলিয়ে বিপদের সময় মানুষের সেবা করতে পেরে ভালো লাগছে।

মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শাহীন বলেন, হাসপাতালে বিদ্যুৎ ছিল না। আবার জেনারেটরেও তেল ছিল না। তারপরেও সবাই মিলে সাত প্রসূতি মায়ের নরমাল ডেলিভারি নিশ্চিত করতে পেরেছি। ওই রাতে দায়িত্ব পালন করা সবাই খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন। এ জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান এ কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।