ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আলোচনা সভায় বিআইডিএস মহাপরিচালক

পাশ্চাত্যের রাষ্ট্রদূতদের ডেকে প্রতিবাদ জানানো উচিৎ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২২
পাশ্চাত্যের রাষ্ট্রদূতদের ডেকে প্রতিবাদ জানানো উচিৎ

ঢাকা: বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন বলেছেন, রাশিয়ার প্রতি পাশ্চাত্যের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব থেকে অন্তত রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সহসা আমাদের মুক্তি নেই। কিন্তু সামাজিক পর্যায়ে এ অবস্থার নিরসনের জন্য জোরালো অবস্থান তুলে ধরা দরকার।

তিনি বলেন, ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের উচিৎ পাশ্চাত্যের সব রাষ্ট্রদূতকে নিমন্ত্রণ করে প্রতিবাদ জানানো। এবং বাংলাদেশের জনগণ কতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তা জানানো। প্রতিবাদ ওঠা উচিৎ বৃহত্তর সিভিল ও রাজনৈতিক সমাজের পক্ষ থেকেও।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সমাজ গবেষণা কেন্দ্র আয়োজিত ‘রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ; পথের শেষ কোথায়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ড. বিনায়ক সেন বলেন, একটি মাল্টিপোলার বহুকেন্দ্রিক বিশ্বের নীরব আত্মপ্রকাশ ঘটছে আমাদের চোখের সামনেই। আমরা ইউক্রেন যুদ্ধের যেভাবে আশু সমাপ্তি চাই, সেভাবেই আমাদের এই মাল্টিপোলার বিশ্বের নির্মাণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করতে হবে। পাশ্চাত্য-কেন্দ্রিক বিশ্ব বহু আগে থেকে আমাদের শাসন করে চলেছে। রাজনৈতিক বা ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ এখন অর্থনৈতিক সম্পর্কের নির্ধারক হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ চাপটা এখন বড় বেশি নগ্ন। এ অবস্থার নিরসন বা অবসান হওয়া দরকার।

বিআইডিএস মহাপরিচালক বলেন, ইউরোপের যুদ্ধ ইউরোপে ঘটছে, কারা এতে জয়ী হলো বা পরাজিত হলো, তাতে এক-অর্থে আমাদের কিছু যায় আসে না। কিন্তু আমরা এরকম অবস্থানে যেতে পারছি না; তার প্রধান কারণ পাশ্চাত্যের অর্থনেতিক নিষেধাজ্ঞা। এই নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার ওপরে আরোপ হয়েছে বটে, কিন্তু পরোক্ষভাবে এর ভুক্তভোগী আমরা সবাই। বিশেষত বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো যাদের বড় ধরনের দর কষাকষির শক্তি নেই। তারা বড় উভয় সংকটে আছে।

যদি এ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার ক্ষেত্রে কার্যকর হতো তাহলে যুদ্ধ বেশিদিন চলতে পারত না। এবং আমরাও এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতাম। কিন্তু এই আট মাসের যুদ্ধে এটুকু পরিষ্কার, রাশিয়ার অনেক ক্ষয় ক্ষতি হলেও তাকে নোয়ানো যায় নি। তার অর্থনীতি আদি-প্রত্যাশা অনুযায়ী ভেঙে পড়েনি। বরং উল্টো তার স্বাবলম্বিতা বেড়েছে। রুবলের বিনিময় হার বেড়েছে। সমরাস্ত্র উৎপাদন ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনী সাফল্য বেড়েছে। কিন্তু আমাদের এতে কোনো লাভ হয়নি। আমরা আরও বেশি চড়া মূল্যে তেল-গ্যাস-খাদ্যশস্য-সার-ভোজ্য তেল প্রভৃতি আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কিনছি।

তিনি আরও বলেন, অকার্যকর এ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার জন্য তৃতীয় বিশ্বের উচিৎ পাশ্চাত্যকে তিরস্কার করা। নিষেধাজ্ঞা যার জন্য তার ক্ষতি না করে সেটা যদি গরীব ও দুর্বল দেশসমূহকে অধিক হারে ক্ষতিগ্রস্ত করে তাহলে সে নিষেধাজ্ঞাকে তিরস্কার করার নৈতিক অধিকার তৃতীয় বিশ্বের রয়েছে বৈকি।

আলোচনা সভায় অংশ নেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ’র (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ, কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, অধ্যাপক দিলীপ নাথ, প্রকৌশলী ড. আবুল কাশেম প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, ২৮ অক্টোবর, ২০২২
এমকে/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।