ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

পাথর কোয়ারি সচলের দাবিতে সিলেটে সোমবার থেকে ধর্মঘট

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২২
পাথর কোয়ারি সচলের দাবিতে সিলেটে সোমবার থেকে ধর্মঘট

সিলেট: দফায় দফায় বাড়ছে দ্রব্যমূল্যে দাম। বাজারে অস্থিরতা থাকায় জনগণের নাভিশ্বাস ওঠছে।

ব্যবসায়ীরা পণ্য পরিবহনে মূল্য বৃদ্ধির অজুহাত দিয়ে ক্রমশ দাম বাড়াচ্ছেন। এ অবস্থায় পাথর কোয়ারি সচল ইস্যুতে পণ্য পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ট্রাক মালিক-শ্রমিকরা।
 
সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে বিভাগীয় ট্রাক, পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ এ ধর্মঘট আহ্বান করেছে।  
 
রোববারের (৩০ অক্টোবর) মধ্যে পাথর উত্তোলনের অনুমতি না দিলে সোমবার (১ নভেম্বর) থেকে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট পালনের কর্মসূচি পালন করবেন তারা।

এ খাতের সংশ্লিষ্ট নেতারা জানান, সিলেটের কোয়ারিগুলো থেকে পাথর উত্তোলন খাতে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ জড়িত। কিন্তু পাঁচ বছর ধরে কোয়ারিগুলো বন্ধ থাকায় ট্রাক মালিক-শ্রমিক, পাথর কোয়ারি মালিক-শ্রমিক সবাই সংকটে পড়েছেন। কোয়ারি বন্ধ থাকায় পরিবহন মালিক শ্রমিকসহ সবাই ঋণের জালে আবদ্ধ।
 
এ বিষয়ে সিলেট বিভাগীয় ট্রাক, পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক গোলাম হাদী ছয়ফুল বলেন, পাথর কোয়ারি খুলে দিতে গত ১৬ অক্টোবর বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু এ ব্যাপারে প্রশাসন নিশ্চুপ। তাই বাধ্য হয়ে রোববার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছি। সোমবার থেকে সিলেট জেলায় ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের আহ্বান করা হয়েছে। কোয়ারি সচল না হলে বিভাগজুড়ে পণ্যপরিবহণের ডাক দেওয়া হবে।
 
সিলেট জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু সরকার বাংলানিউজকে বলেন, পাথর কোয়ারি খুলে দিতে গত ৫/৬ বছর ধরে দাবি জানানো হচ্ছে। এ কারণে সংহতি জানিয়ে আন্দোলনে যেতে বাধ্য হচ্ছি আমরা। কেননা, সিলেট বিভাগে ২৫ হাজার এবং জেলায় প্রায় ৯ হাজার ট্রাক রয়েছে। এসব ট্রাক শ্রমিকদের সংখ্যা বিভাগজুড়ে লাখের কাছাকাছি এবং জেলায় অন্তত ১৫ হাজার ট্রাক শ্রমিক রয়েছে। তাদের রুটিরুজি ট্রাক কেন্দ্রিক। সেই সঙ্গে সিলেটের কোয়ারিগুলোতে অন্তত সাত লাখের অধিক পাথর শ্রমিক রয়েছে। এসব শ্রমিকরা অনাহারে অর্ধহারে দিনাতিপাত করছেন। আর অন্তত ২৫ শতাংশ শ্রমিক ট্রাক কিস্তিতে কিনে মালিক হয়েছেন। কিন্তু কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় তারা এখন দেউলিয়া।
 
তিনি বলেন, খোদ প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ২০২৩ সালে দেশে অর্থনীতির চরম সংকট দেখা দেবে। এ অবস্থায় পাথর কোয়ারি খুলে দিলে ট্রাক মালিক, শ্রমিক ও কোয়ারি মালিকদের সঙ্গে লাখ লাখ শ্রমিকরাও উপকৃত হবে। পাশাপাশি এ খাত থেকে সরকারের অন্তত ৮০/৯০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে। কেবল আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করে পাথর কোয়ারি সচলে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।  
 
এদিকে, পাথর কোয়ারি খুলে দিতে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে ডিও লেটার দিয়েছেন সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। গত ২৬ অক্টোবর তিনি এই ডিও লেটার দেন।
 
উল্লেখ্য, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গত ৫/৬ বছর ধরে সিলেটের গোয়াইনঘাটে জাফলং বিছানাকান্দি, কোম্পানীগঞ্জে ভোলাগঞ্জ শাহ আরেফিন টিলা ও কালাইরাগ, কানাইঘাটে লোভাছড়া, জৈন্তাপুরে শ্রীপুর এবং সুনামগঞ্জ জেলায় তাহিরপুরের জাদুকাটা কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখা হয়েছে। এ অবস্থায় বেকার জীবনযাপন করছেন লাখ লাখ শ্রমিক। তবে আড়ালে পাথর উত্তোলন অব্যাহত থাকলেও ব্যবসায়ীরা এলসির মাধ্যমে ভারত থেকে পাথর আমদানি অব্যাহত রেখেছেন।   

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২২
এনইউ/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।