ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প করেন টাকা সরানোর জন্য: দুদু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৫ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০২৩
প্রধানমন্ত্রী বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প করেন টাকা সরানোর জন্য: দুদু বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প টাকা সরানোর জন্য করেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।

তিনি বলেন, আপনি (প্রধানমন্ত্রী) বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প টাকা সরানোর জন্য করেন।

এমন কোনো জায়গা নেই, যেই জায়গা থেকে আপনি টাকা সরাননি। এমন একটি ব্যাংক নেই, যেই ব্যাংক থেকে আপনার লোকজন টাকা সরায়নি।

সোমবার (৫ জুন) শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪২তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত 'বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও জিয়াউর রহমান বীর উত্তম সমার্থক' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।  

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।

শামসুজ্জামান দুদু আরও বলেন, আজকে ঘোষণা এসেছে, পায়রা বন্দর স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে৷ সব বন্ধ হয়ে যাবে। আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) এখন একমাত্র রক্ষা করতে পারেন বেগম খালেদা জিয়া। এটি আপনাকে মানতে হবে।

তিনি আরও বলেন, দেশের অভ্যন্তরে এবং সারা বিশ্বে একটি জিনিস অত্যন্ত স্পষ্ট হয়ে গেছে, সামনের সময়টি পরিবর্তনের সময়। এ বছরই শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে। এটি তিনিও জানেন। ৷ তিনি এত অপকর্ম করেছেন, ক্ষমতা ছাড়া ছাড়া আর কোনো পথ নেই।

বিএনপির এ নেতা বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান এমন একজন মানুষ ছিলেন, যাকে শ্রদ্ধা না জানালে, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ সম্মানিত হয় না৷ শিষ্ঠাচার উন্নত জায়গায় গিয়ে পৌঁছায় না। তাকে নিয়ে গর্ব করা যায়। যার সংস্পর্শে থেকে নিজেকে উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যেতো। তার সঙ্গে দেশের কারোর তুলনা হয় না। সারা বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত যেসব রাষ্ট্র নায়ক, যোদ্ধা, মুক্তি সংগ্রামী আছেন, সেই পর্যায়ের মানুষ হচ্ছেন জিয়াউর রহমান।

তিনি আরও বলেন, এখন কিছু বুদ্ধি প্রতিবন্ধী তাকে (জিয়াউর রহমান) ছোট করতে পারলে উল্লাসে নৃত্য করতে থাকে। তার সম্বন্ধে যে কথাগুলো বিভিন্ন সময়ে উচ্চারণ করা হয়, এত ছোট মনে হয় পৃথিবীর আর কখনো কাউকে করা হয়নি। ইতিহাসের যিনি মহানয়ক, তাকে পাকিস্তানি চর বলা হচ্ছে। যারা এসব কথা বলে, এরা কারা? কোন দেশ থেকে এসেছে? এরা কি ইতিহাসের মহান ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু জানে না? এরা পরশ্রীকাতর। এরা অন্যকে পদলেহন করে আর শুধু নিজেকে ভাবে৷

বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে ভারত থেকে কম দামে কয়লা আনা যেতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, টাকা নেই দেখে ভারত এখন কয়লা দিচ্ছে না। কিন্তু দেশের জনগণ বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেই বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছে। তাহলে টাকা থাকবে না কেন? কয়লা কিনতে পারবে না কেন? আর ভারত তো আপনার (প্রধানমন্ত্রী) পরম বন্ধু। তাহলে সাহায্য করছে না কেন? তার মানে ভারত এখন আপনার বন্ধু না। আমেরিকাও এখন আপনার সঙ্গে নেই। বাংলাদেশকে এমন একটি বন্ধুহীন রাষ্ট্রে আপনি (প্রধানমন্ত্রী) পরিণত করেছেন। এমনকি রাশিয়া-চীনও আপনার সঙ্গে আছে, এর প্রমাণও আপনি দিতে পারবেন না। কারণ এ সংকটকালীন সময়ে তারা আপনার পাশে এসে দাঁড়ায়নি।

শামসুজ্জামান দুদু আরও বলেন, ১৯৭২-৭৫ সাল পর্যন্ত দেশে দুর্ভিক্ষ ছিল। না খেয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা গেছে কেউ পাশে এসে দাঁড়ায়নি। এ অপশাসনের বিরুদ্ধে যেই কথা বলেছে রক্ষীবাহিনীর মাধ্যমে তাকে গুম ও খুন করা হয়েছে৷ অভিযোগ আছে, বিরোধী দলের ৪০ হাজার কর্মী তখন নিহত হয়েছে। ৭৫ পরবর্তী সময়ে শহীদ জিয়ার পাশে আমেরিকা, সৌদি আরব, চীন, মধ্যপ্রাচ্য এসে দাঁড়িয়েছে। শহীদ জিয়া একটি দুর্ভিক্ষ পীড়িত জাতিকে চাল রপ্তানি করা জাতির মর্যাদা দিয়েছেন। কিন্তু এ নিয়ে তার ভিতর অহংকার ছিল না। এমন একটি মানুষকে আওয়ামী লীগই পারে ছোট করতে। কারণ তারা কখনোই শিষ্টাচার শেখেনি, নৈতিকতা, ভদ্রতা শেখেনি। শিক্ষা বলে তাদের মধ্যে কিছু নেই।

শেখ হাসিনা নিজেকে ইতিহাসের পাতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য দুইবার সুযোগ পেয়েছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা কয়লা খায়, তারা ভালো কিছু খেতে পারে না৷  ওরা শুধু কয়লাই খায়। আপনি (শেখ হাসিনা) ২০১৪ সালের নির্বাচনা ভালো করতে পারতেন। সুযোগ ছিল আপনার। খালেদা জিয়া আপনার পাশে এসে দাঁড়াতে চেয়েছিল। কিন্তু আপনার অহংকারে মাটিতে পা পড়ে না৷ আপনি ২০১৪ সালের নির্বাচন করে নিজেকে এমন এটি ঘৃণিত জায়গায় নিয়ে গেলেন, যা আর পরিবর্তন হবে না।  আবার আপনি ২০১৮ সালে সুযোগ পেলেন। সব বিরোধী দলকে আপনি বিশ্বাস করতে বলেছিলেন। কিন্তু ২০১৮ সালের নির্বাচন আপনার দিনে করার সাহস হলো না, করলেন রাতের বেলা।

জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ, বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদিন, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হালিম ও মোবারক হোসেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০২৩
এসসি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।