ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বর্গীরা যেমন আগে বাংলাদেশে এসে লুট করে চলে যেত, বর্তমান সরকারের লোকজনও ঠিক একইভাবে দেশের টাকা লুট করে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ছে।
সোমবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী-খাদ্যমন্ত্রী নিজেরাই ব্যবসায়ী এবং এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। ‘খাদ্য উৎপাদন, আমদানি ও বাজার পরিস্থিতি প্রেক্ষিত খাদ্য অধিকার’ শীর্ষক সেমিনারে অধিকাংশ বক্তাই চালের দাম বাড়ার পেছনে খাদ্যমন্ত্রী ও তার নিয়ন্ত্রণাধীন রাইস মিলগুলোর ভূমিকাকে দায়ী করেন। মন্ত্রী নিজেই বলেছেন, ব্যবসায়ীদের অতি লোভের কারণে মাঝে মাঝেই চালের দাম বাড়ে। ইতোপূর্বে ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়ানোর কথা বলা হলেও বর্তমানে বাংলাদেশে চালের দাম এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ। বলা হচ্ছে-বাংলাদেশ থেকে চাল রফতানি হচ্ছে, অথচ অব্যাহত চাল আমদানি চলছে। একই সঙ্গে হু হু করে বাড়ছে দাম। বাণিজ্যমন্ত্রী দেশের বড় ব্যবসায়ী। ভোজ্য তেল, পেঁয়াজের দাম নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। খবরের কাগজে বেরিয়েছে তলে তলে তারা সিন্ডেকেটে জড়িত। সিন্ডিকেট জনগণের পকেট কেটে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে এক শাসরুদ্ধকর দুঃসহ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে দেশের মানুষের জীবন। রাষ্ট্রীয় লুটেরা দস্যুদের পায়ের তলে অশ্রুপাত করছে মানবতা। একদিকে স্বেচ্ছাচারী একনায়ক শাসকের শোষণে নিষ্পেষিত জনগণ, অপরদিকে দ্রব্যমূল্যের ভয়াবহ ঊর্ধ্বগতিতে অসহনীয় হয়ে উঠেছে জনজীবন।
রিজভী বলেন, রোববার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। আসলেই তিনি তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মানুষের ওপর অসহনীয় ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে। তাক লাগিয়ে দিয়েছেন দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলে, তাক লাগিয়ে দিয়েছেন দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার ও ব্যাংক লুটের সুযোগ করে দিয়ে। কিন্তু তথাকথিত উন্নয়নের তাস দিয়ে মানুষের মন জেতা যাবে না।
তিনি বলেন, করোনার অভিঘাতে মানুষের আয় রোজগারে যখন টানাপোড়েন অবস্থা তখন হু হু করে বাড়ছে নিত্য পণ্যের বাজার দর। খাদ্যদ্রব্য, চাল, ডাল, তেল, লবণ, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, তরিতরকারী, মাছ-মাংস, পোলট্রি মুরগি, ডিম, চিনি, দুধ থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য দ্রব্যগুলোর মূল্য বাড়ছে প্রতিদিন এবং ক্রমে এসব পণ্য সংগ্রহ অসম্ভব হচ্ছে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত মানুষগুলোর জন্য। পাশাপাশি গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির বিলও বৃদ্ধি করা হয়েছে পাল্লা দিয়ে।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২১
এমএইচ/এমএমজেড