ঢাকা: দীর্ঘ ৫০ বছরে নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠনে আইনি কাঠামো তৈরি করতে না পারা সব সরকারেরই ব্যর্থতা বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে।
কোন প্রক্রিয়ায় কাদের নিয়ে নতুন ইসি গঠন হবে এবং আগামী জাতীয় নির্বাচন কেমন হবে, তা নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন এখন সরব।
এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন প্রক্রিয়া কেমন হওয়া উচিৎ জানতে চাইলে বাংলানিউজকে হাসানুল হক ইনু এসব কথা বলেন।
হাসানুল হক ইনু বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে একটা নির্দেশনা রয়েছে, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে একটি আইনি কাঠামো তৈরি করা উচিত। দীর্ঘ ৫০ বছরে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইনি কাঠামো তৈরি করতে না পারা সব সরকারেরই ব্যর্থতা। আমি মনে করি এখনও যে সময় রয়েছে তাতে আইনি এই কাঠামোটা তৈরি করা উচিত এবং তার ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, যদি সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, তাহলে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট কেন্দ্রে যাবে। অন্যদিকে আবার রাজনৈতিক দলগুলো যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, তাহলে জনগণ ভোটকেন্দ্রে যাবে না। নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দল যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তাহলে জনগণের নির্বাচনের প্রতি আগ্রহ কমে যাবে এটাই বাস্তবতা।
নাম উল্লেখ না করেই তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল যদি নির্বাচনের নামে নির্বাচন নির্বাচন খেলা খেলবে, আবার নির্বাচন বর্জন করবে, সেখানে জনগণ স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচনের প্রতীক উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে। সুতরাং জনগণকে ভোট কেন্দ্রে ফিরিয়ে আনার প্রথম শর্ত হচ্ছে সব রাজনৈতিক দলকে জোরেশোরে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। মারামারি কাটাকাটি যাই হোক না কেন নির্বাচনকেন্দ্রেই হবে, সেই চ্যালেঞ্জ যদি কেউ গ্রহণ না করে তাহলে জনগণের ভোটের প্রতি আগ্রহ কম থাকাটাই স্বাভাবিক।
নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা ফেরাতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা কি হওয়া উচিত জানতে চাইলে হাসানুল হক ইনু বলেন, নির্বাচন কমিশনের এক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা নেই। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলেই জনগণ ভোটকেন্দ্রে আসবে। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো যদি ভোটে অংশগ্রহণ না করে স্বাভাবিকভাবেই ভোটের প্রতি জনগণের আগ্রহ কম থাকবে। সুতরাং কে ভোটে অংশগ্রহণ করবে বা করবে না সে ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই।
সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণের পরিবেশ রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে জাসদ সভাপতি বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তারপর তারা বলুক নির্বাচনের পরিবেশ রয়েছে কিনা, তাহলে আমরা বুঝতে পারবো কোথায় নির্বাচনের পরিবেশ লঙ্ঘন করা হয়েছে। পাঁচ হাজার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে বোঝা যেত, কোথায় মারামারি হচ্ছে, কোথায় আইনের লঙ্ঘন হচ্ছে। তখন নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলতে পারতাম। পাঁচ হাজার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন বর্জন করার মধ্যে দিয়ে আমরা বুঝতেই পারছি না নির্বাচন কীভাবে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২১
আরকেআর