ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

ইডেনের ‘অপরাধী চক্রকে’ দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে: আ স ম‌ রব

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০২২
ইডেনের ‘অপরাধী চক্রকে’ দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে: আ স ম‌ রব আ স ম রব। ফাইল ছবি

ঢাকা: রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজের ‘নারী শিক্ষার্থীদের নৈতিক জীবনযাপন’ ধ্বংসের জন্য দায়ীদের দ্রুত গ্রেফতার, বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি এবং ২১ নারী অধিকার কর্মীর ইতিবাচক বিবৃতিকে সমর্থন জানিয়েছেন স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক আ স ম আবদুর রব।

বুধবার (৫ অক্টোবর) গণমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে ইডেনের নারী শিক্ষার্থীদের যৌন-নিপীড়ন ও যৌন দাসত্বে বাধ্য করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোনো তদন্ত, গ্রেফতার বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে নারীদের প্রতি ভয়াবহ নিষ্ঠুরতাকে নীরবতায় সরকার সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।

ছাত্রলীগ নেতাদের সিট বাণিজ্য, চাঁদাবাজি এবং শিক্ষার্থীদের ‘অনৈতিক কাজে বাধ্য করার’ স্বাক্ষ্য দিয়েছে সাধারণ ছাত্রীসহ ছাত্রলীগের নেত্রীরাই। তারাই এ ভয়াবহ অন্যায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।

তিনি বলেন, এই গুরুতর অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ এবং কলেজ অধ্যক্ষকে অপসারণ করা উচিত ছিল। দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া রাষ্ট্রের কর্তব্য। ভয়ংকর অন্যায় করার পরও ছাত্রলীগ ও কলেজ প্রশাসন তাদের কর্মকাণ্ডকে যুক্তিযুক্ত করে তোলার অপচেষ্টা করছে। এ ধরনের নৈতিক অধঃপতন কোনো পরিসংখ্যান দিয়ে পরিমাপ করা সম্ভব নয়।

আ স ম রব বলেন, সরকার অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে ছাত্রলীগকে অর্থ ও পেশী শক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে গিয়ে ধ্বংসের গহ্বরে ঠেলে দিয়েছে। সম্ভাবনাময় ছাত্র সমাজকে কুৎসিত পথে ধাবিত করেছে। নিজেদের পদ-পদবী সুরক্ষিত করতে মেয়েদেরকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করার ভয়াবহ রাজনীতির ভয়ংকর কৌশল ছাত্রলীগ এবং সরকারের মেলবন্ধনই সম্ভব। ইডেনের ঘটনা ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয় - এটা সরকারের অপশাসন ও দুঃশাসনের রাজনৈতিক সংস্কৃতি।
 
অপরাধী চক্রের সঙ্গে দলকানা শিক্ষা প্রশাসন ও সরকারের আঁতাত ইডেনের মত ঐতিহ্যময় ও গৌরবময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ‘ঘৃণিত’ প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত করার পাঁয়তারা করছে, যা দেশের সমগ্র নারী-পুরুষকে বিক্ষুদ্ধ করেছে। সরকারি ছাত্র সংগঠন তথা ছাত্রলীগসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির দলকানা শিক্ষকদের এমন ঘৃণিত অপকর্মের জন্য ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা পর্যন্ত পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করছে।  

তিনি বলেন, সরকারি ছাত্র সংগঠন আবরার হত্যাসহ বহু হত্যাকাণ্ড ও অপরাধে জড়িত, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন এবং কোটা বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের উপর নিপীড়ন, হেলমেট বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ, বিরোধী দলের ছাত্র সংগঠনের ওপর প্রতিনিয়ত হামলা এবং সর্বশেষ ইডেনের ঘটনার পর এই সংগঠনকে নৈতিক বা আইনগত সমর্থন যোগানোর জন্য সরকারকে জাতির কাছে জবাবদিহি করতে হবে। এই সংগঠন নৈতিকভাবে সংশোধিত হওয়ার অযোগ্য হয়ে উঠেছে।

এই কথিত ছাত্র সংগঠনের ওপর সরকারের অতিরিক্ত ভরসা সমাজে বিরূপ ও ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে এবং নারীদের মর্যাদা সহকারে বেঁচে থাকাকে কঠিন করে তুলছে। এতে নারীর সার্বিক মুক্তির প্রশ্নটি আরও কঠিনতর হয়ে পড়ছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভয়াবহ পরিস্থিতির উত্তরণে ছয় দফা দাবি তুলে ধরে এই নেতা বলেন, বিচার বিভাগীয় ‘তদন্ত কমিশন’ গঠন এবং শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে; ইডেনে সংঘঠিত নিকৃষ্টতর অন্যায়ের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে; ইডেন কলেজের অধ্যক্ষকে অবিলম্বে অপসারণ করে কৃত অপরাধের জন্য বিচারের আওতায় আনতে হবে; ইডেনের অধ্যক্ষ কর্তৃক ভয়াবহ অন্যায়কে আড়াল করার ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ তদন্ত বাতিল করতে হবে; ইডেনের শিক্ষার্থীদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, শিক্ষার স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে; এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনীতির নামে ‘বিপজ্জনক খেলা’ অচিরেই বন্ধ করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০২২
এমএইচ/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।