ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রবাসে বাংলাদেশ

সিঙ্গাপুরের বিস্ময় চাঙ্গি বিমানবন্দর!

তামিম মজিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৯
সিঙ্গাপুরের বিস্ময় চাঙ্গি বিমানবন্দর!

সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে: সিঙ্গাপুরের বিস্ময় চাঙ্গি বিমানবন্দর। সাগরের কোলঘেঁষা ছোট্ট দেশটির আধুনিক দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যে নির্মিত এ বিমানবন্দর একটি বিস্ময়কর স্থাপনা। এটি শুধু বিমানবন্দরই নয়, একটি বহুমাত্রিক পর্যটন কেন্দ্রও।

চাঙ্গি বিমানবন্দরে যেন রাতের দেখা মেলে না, এখানে দিনরাত সমান। প্রতিমুহূর্তেই বিমান নামছে-উঠছে।

আর মানুষের আনাগোনা লেগেই থাকছে। নানান দেশের নানান মানুষের আনাগোনায় অন্যরকম রূপ ধারণ করে চাঙ্গি বিমানবন্দর। তবে রাতে নানান বাতির আলোয় চাঙ্গি যেন তার আসল রূপ তুলে ধরে।

আধুনিক স্থাপত্যে সিঙ্গাপুরের খ্যাতি পুরনো হলেও চাঙ্গির নতুন টার্মিনালগুলো এতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। কী নেই বিমানবন্দরে! বিশ্বের বৃহত্তর কৃত্রিম ঝর্ণা, উদ্ভিদের সংগ্রহশালা থেকে শপিংমল। চারটি টার্মিনাল নিয়ে তৈরি আধুনিক এই বিমানবন্দর দেখলেই চোখ জুড়ে যে কারোরই। আধুনিক প্রযুক্তির সবই রয়েছে এখানে।

এ বিমানবন্দরের ভেতরেই রয়েছে এখানকার অন্যতম আকর্ষণ ১০তলা বিশিষ্ট জুয়েল চাঙ্গি বিমানবন্দর কমপ্লেক্স। যার নকশা করেছেন ইসরায়েলি-কানাডিয়ান স্থপতি মোশে সাফদি। প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার জায়গাজুড়ে গড়ে তোলা দৃষ্টিনন্দন এই স্থাপনায় রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু (৪০ মিটার) কৃত্রিম ঝর্ণা ‘রেইন ভরটেক্স’। এ কমপ্লেক্সের ১০তলার মধ্যে চারতলাজুড়ে রয়েছে সতেজ ফরেস্ট ভ্যালি। যেখানে রয়েছে হাজারও গাছ আর বিভিন্ন উদ্ভিদ। সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে বৃহত্তর ইনডোর গাছগাছালির সংগ্রহশালার মধ্যে এটি অন্যতম। কমপ্লেক্সটিতে ২৮০টি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের বিভিন্ন পণ্যের দোকান রয়েছে।  

সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দর একটি হলিডে ডেস্টিনেশন। সিঙ্গাপুরে ঘোরার সময় এ বিমানবন্দরে বসেই দিব্যি আরাম করতে পারবেন পর্যটকরা। বিশাল এই বিমানবন্দরে রয়েছে স্কাই ট্রেনও। যার মাধ্যমে এক টার্মিনাল থেকে আরেক টার্মিনালে সহজেই যাতায়াত করা যায়। প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় না থাকলে এ বিমানবন্দর পেরিয়ে বাইরে যাওয়াই দায় হবে যেকারোরই।  

বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত এ বিমানবন্দর থেকে প্রতি মুহূর্তেই বিভিন্ন গন্তব্যের প্লেন উড়ে যাচ্ছে। এ দৃশ্য দেখতে ছাদে তৈরি করা হয়েছে সুইমিংপুল। পর্যটকরা ছাদের সুইমিংপুলের জলে পা ডুবিয়ে সেই দৃশ্য দেখতে পারবেন।  

অন্যদিকে টার্মিনাল ২-এর অর্কিডের বাগানে দেখা মেলে সিঙ্গাপুরের জাতীয় ফুলের। বিমানবন্দরের অন্দরেই রয়েছে চারতলা স্লাইড। যেখানে একবার ঢুকলে প্রতি সেকেন্ডে ছয় মিটার করে নিচে নামতে থাকবেন পর্যটকরা।  

চাঙ্গি বিমানবন্দর।  ছবি: বাংলানিউজ

এছাড়া সেখানে বিনামূল্যে ফুট ম্যাসাজের ব্যবস্থাও রয়েছে। সেলফি তুলতে রয়েছে সোশ্যাল ট্রি; যেখানে একটি বিশাল স্ক্রিনে প্রতিনিয়ত দেখানো হচ্ছে বিমানবন্দরে আগত যাত্রীদের সেলফি-পোস্ট। পাশাপাশি ছোট ছেলে-মেয়েদের জন্য এখানে রয়েছে প্লেরুম।  

পর্যটকরা চাইলে এ বিমানবন্দরেই শপিং করতে পারবেন প্রাণভরে। চাঙ্গি বিমানবন্দরে রয়েছে বিশ্বের সব বড় বড় ব্র্যান্ডগুলোর শো-রুম। কয়েকশো’ প্রজাতির প্রজাপতিদের নিয়ে তৈরি হয়েছে চাঙ্গির বাটারফ্লাই গার্ডেন। এই বিমানবন্দরে রয়েছে ২৪ ঘণ্টার সিনেমা হল। যেখানে সিনেমা দেখতে পর্যটকদের কোনো পয়সা খরচ করতে হয় না।  

চাঙ্গি বিমানবন্দরে চারটি টার্মিনাল রয়েছে। কোন এয়ারলাইন্স কোন টার্মিনালে অবতরণ করবে, সেটিও ঠিক করে রাখা হয়েছে। এছাড়া বিশাল আকারের স্ক্রিনগুলোতে বিভিন্ন ফ্লাইটের সর্বশেষ তথ্যও দেখানো হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৯
টিএম/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।