যদিও বিভিন্ন সূত্র থেকে শোনা যাচ্ছিলো সিদ্ধান্তটি তার ছিল না। ছিল টিম ম্যানেজমেন্টের।
ব্লুমফন্টেইনে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টেও ওই একই ভুল। ফ্ল্যাট উইকেটে যেখানে প্রথম দুই দিন রান আসার কথা, সেই রানপ্রসবা উইকেটেই তিনি আবার নিলেন ফিল্ডিং। সেই সুযোগটি শতভাগ কাজে লাগিয়েই ডিন এলগার ও মার্করামের সেঞ্চুরিতে দিন শেষে ৪২৮ রান নিয়ে উৎসব করেছে স্বাগতিক শিবির। দ্বিতীয় দিন সেখান থেকে শুরু করে আমলা ও ডু প্লেসিসের সেঞ্চুরিতে মধ্যাহ্ন বিরতির পরে ৫৭৩ রানে ইনিংস ঘোষণা করে প্রোটিয়ারা।
দেখার বিষয় হলো, গেলো সোয়া একদিন বোলিং করে স্বাগতিকদের মাত্র ৪ উইকেটের পতন ঘটাতে সক্ষম হয়েছেন বোলাররা। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রোটিয়া পেস তোপে টালমাটাল বাংলাদেশ। তাতে মুশফিকদের আরেকটি বড় ব্যবধানে হার অপেক্ষা করছে, একথা যে কেউই বলবেন।
তাহলে সারমর্ম দাঁড়ালো সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হচ্ছেন বাংলাদেশ দলের দলপতি মুশফিকুর রহিম। যা দিনান্তে দলের হার বয়ে আনছে। নজির আছে এমন ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই অতীতে অধিনায়কত্ব হারিয়েছেন নাইমুর রহমান দূর্জয়, খালেদ মাহমুদ সুজন ও হাবিবুল বাশারের মতো মুশফিকের অগ্রজরা। ভয় হয় সেই পথের পথিক হওয়ায় মুশফিককেও না অধিনায়কত্ব হারাতে হয়।
কেননা দলের এসব ব্যর্থতার দায়ভার নিতে হচ্ছে মুশফিককেই। তিনি যে অধিনায়ক। দল ভালো করলে যেমন তার কৃতিত্ব তেমনি খারাপ করলেও দায়ভারটা তার উপরেই বর্তায়। বাংলাদেশ ক্রিকেটের ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খানও তাই বললেন, ‘অধিনায়ক হিসেবে সব কিছুর দায়িত্ব নিতে হবে মুশফিকেই। অধিনায়ক মানে দলের দায়িত্ব তার। সে যত কিছু বলুক না কেন, অধিনায়কের দায়িত্ব গুলো কিন্তু তারই পালন করতে হবে। ’
কিন্তু মুশফিক পারেননি। বোলিং ইনিংসে অধিনায়করা অধিকাংশ সময়ই স্লিপ, মিড অন বা মিড অফে ফিল্ডিং করে থাকেন। অন্তত ব্যাটসম্যানের কাছাকাছি অবশ্যই। অথচো ব্লুমফন্টেইনে দক্ষিণ আফ্রিকার রান উৎসবের দিনে মুশফিক ফিল্ডিং করেছেন ডিপে। সেটাও নাকি কোচদের সিদ্ধান্তে। তাকে স্লিপ কিংবা মিড অন, অফে ফিল্ডিং করতে দেয়া হয়নি কারণ তিনি নাকি সেখানে ভালো ফিল্ডিং করেন না।
কোচদের সামনে মুশফিক নিজেকে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছেন যে তিনি ওখানেই ফিল্ডিং করে স্বাচ্ছ্বন্দ্য বোধ করবেন। অন্যদিকে বহুদিন ধরেই বিভিন্ন মাধ্যম থেকে শোনা যাচ্ছে হাথুরুর সঙ্গে মুশফিকের টানপোড়েন যাচ্ছে। অথচ সেই কথাটিও তিনি বোর্ডের দায়িত্বশীল কাউকেই অবহিত করেননি বলে অভিযোগ করলেন আকরাম, ‘কোচের সঙ্গে সমস্যা আছে কি-না, আমরা জানি না। ওতো (মুশফিক) আমাদের এ বিষয়ে কিছু বলেনি। এমন কিছু হলে ওর উচিত আমাদের সঙ্গে আলোচনা করা। অফিসিয়ালি সে আমাদের কিছুই বলেনি। ’
আকরামের কথাই যদি সত্যি হয় তাতে করে দিন শেষে ক্ষতিটা হচ্ছে কার? মুশফিকের নাকি বাংলাদেশের? যেহেতু এখানে দেশের সম্মান জড়িত তাই তার ব্যক্তিগত ক্ষতির দিকটি কেউই দেখবেন না। এমন লজ্জার এক একটি হার থেকে বাঁচাতে সবাই দেশের স্বার্থই আগে দেখবেন। তাতে করে নিজ দায়িত্ব থেকে হয়তো মুশফিককে সরে যেতেও হতে পারে। কেননা সময় যে বড় নির্মম!
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, ৭ অক্টোবর ২০১৭
এইচএল/এমআরপি