মাদারীপুরের ১৫০ বছরের আলহাজ খাদেম হোসেন শিকদার পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত মানুষ হিসেবে নিজেকে দাবি করেছেন। তিনি মৃত্যুর আগে পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ হিসেবে গিনেস বুকে নাম লেখাতে চান।
খাদেম হোসেন শিকদার কিছুটা অস্পষ্ট ভাষায় বলেন, আমার সমোবয়সী এখন কেউ দুনিয়াতে বাঁইচা নাই। মুই আল্লার কাছে দুই হাত তুইল্যা দোয়া-মোনাজাত করেছিলাম ৩০০ বার কোরআন খতমের পরে যেন মোরে দুনিয়া থেকে উঠায়্যা নেয়। মোর মনে হইতাছে ৩০০ বার কোরআন খতম হয় নাই। যার ফলে আল্লাতালা মোরে বাঁচ্যাই রাখছে।
খাদেম শিকদার বিভিন্ন কথার মাঝে ব্রিটিশ ও জাপানের যুদ্ধের কথা বলেন। পড়াশোনার কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, গুরুদাস সাহা জমিদার বাড়িতে একটা স্কুল ছিল, সেখানে তিনি পড়ালেখা করেছেন। বাড়ির পাশের মসজিদের ইমামের কাছে কোরআন শরিফ পড়া শিখেছেন। এখনো কিছুটা অস্পষ্ট সুরে কোরআন পড়েন।
খাদেম শিকদারের ষষ্ঠ ছেলে মোস্তফা শিকদার জানান, আমার বাবার বয়সী মানুষ এখন আর পৃথিবীতে নেই। সুদীর্ঘ জীবনে বাবা দুটি বিয়ে করেন। আমরা মোট ৭ ভাই, ৪ চার বোন। বাবার নাতি-নাতনির সংখ্যা ৪৮ জন। নাতি-নাতনির ঘরে পুতির সংখ্যা ৩৫ জন। বাবা এখনও কিছুটা খালি চোখে কোরআন শরিফ পড়তে পারেন। কিছু দিন আগেও একা একা হেঁটে হাটবাজারে যেতেন। কানে একটু কম শোনেন। তার মতে, ভারতের হাবিব মিয়া যে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীবিত মানুষ ছিলেন এটা ভুল ধারণা। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীবিত মানুষ হিসেবে আমার বাবার নাম এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতায় বাবার নাম উঠা উচিত। আর সেটা হবে বাংলাদেশের জন্য গর্বের বিষয়। এ ব্যাপারে যদি কেউ এগিয়ে আসেন তাহলে আমার বাবার নাম গিনেস বুকে উঠবে।
একই এলাকার মুন্সি ওহাব (৮৫) জানান, খাদেম শিকদারের বড় ছেলে আমার বন্ধু। তার ছেলের বয়স যখন প্রায় পঁচাশি বছর, তখন তার বয়স তো ১৫০ হবেই। আমি জন্মের পর থেকে তাকে একই রকম দেখছি। ৭০ বয়স বয়সী বৃদ্ধা গোলজান বেগম একই সুরে বলেন, আমি সেই ছোটবেলা থেকে তাকে এমনই দেখছি। খোয়াপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী মুন্সী বলেন, খাদেম শিকদারের সমবয়সী কেউ এখন আর জীবিত নেই। তবে তার বয়স ১৫০ না হলেও ১৩০-এর বেশি হবে বলে আমার ধারণা।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ২০১০, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১০