চেন্নাইয়ের জাপানি মিডফিল্ডার কাৎসুম ইয়োসা ২২ মিনিটে একটি ফ্রি-কিককে কেন্দ্র করে ম্যাচ রেফারির সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন। যেখানে পাওয়া গেছে রেসিজমের গন্ধ।
বসুন্ধরা মিডফিল্ডার বখতিয়ারকে ফাউল করলে তার প্রতিবাদ জানান কোচ ব্রুজন। স্প্যানিশ কোচ ঢুকে পড়েন মাঠে। অন্যদিকে চেন্নাইয়ের কোচ মোহাম্মদ আকবরও শ্রীলংকাল রেফারির সঙ্গে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। শেষ পযর্ন্ত দুই কোচকেই লাল কার্ড দেখান রেফারি।
যার কারণে চার লাল কার্ড ও চার হলুদ কার্ডের ঘটনাবহুল এ ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসেননি দুই দলের কোচ। কোচ ব্রুজন ও অধিনায়ক দেনিয়েল কলিন্দ্রেসের পরিবর্তে সাংবাদিকদের সামনে আসেন বসুন্ধরার সহ-অধিনায়ক মাহবুব হোসেন রক্সি ও জয়ের নায়ক জোড়া গোলদাতা লেবানিজ ফরোয়ার্ড জালাল। শেষ চারের আশা বাঁচিয়ে রাখার জন্য ম্যাচটা কতোটুকু গুরুত্বপূর্ণ ছিল তাই জানান রক্সি, ‘আজকের খেলাটি আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যেহেতু আমরা শেষ ম্যাচে হেরেছিলাম। এ ম্যাচটির জন্য আমরা ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। বসুন্ধরা কিংস যেভাবে খেলতে চায় সেভাবেই আমরা মাঠে খেলেছি এবং আমার খেলোয়াড়রা সেভাবেই তৈরি হয়েছিল। ’
প্রতিপক্ষ চেন্নাই তাদের কিংসের খেলা নষ্ট করতে চেয়েছিল, এমন অভিযোগ কিংসের সহকারী কোচের কণ্ঠে, ‘কিছুক্ষণ প্রবলেম তৈরি হয়েছিল মাঠে। কাৎসুমি ইয়োসা রেফারির সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে আমাদের খেলার যে গতি তা থামিয়ে দেয়। তখন ১০-১২ মিনিট খেলা বন্ধ থাকে। তারপর আবার খেলা শুরু হয়। ওরা খেলার বিপক্ষে চলে যায়। যদিও ওরা ভাল দল কিন্তু যে খেলা তারা খেলতে চেয়েছে তা কাম্য নয় এবং তা আন্তর্জাতিকভাবে হয় না। ইচ্ছেমূলকভাবে ওরা খেলতে না চেয়ে আমাদের খেলোয়াড়দের আঘাত করে যাতে আমাদের খেলোয়াড়রা খেলতে না পারে। এই জন্য আজকের খেলার এই অবস্থা। উপরওয়ালার কাছে ধন্যবাদ যে, যে ম্যাচে আমরা জয় পেতে চেয়েছি তা আমরা পেয়েছি। ’
ম্যাচের ভেতর যা হয়েছে তা খেলার অংশ হিসেবেই মনে করেন রক্সি, ‘ম্যাচের মধ্যে যা হয়েছে খেলারই অংশ। ফুটবলে রেফারির সিদ্ধান্তই পক্ষে-বিপক্ষে যাবে এবং রেফারি সবসময় রাইট।
কোচ ব্রুজনের বিতর্কে জড়িয়ে লাল কার্ড দেখার দেখাটিও খেলার অংশ হিসেবে দেখেন তিনি, ‘ব্রুজন যা করেছে, সে তার কোচিংয়ের অবস্থান থেকে ইমোশনালি এবং দলের চাপের জন্যই সে তার টেকনিক্যাল জোন থেকে চলে যায়। এটা খেলার অংশ এবং তা মেনে নিতে হবে। ’
লাল কার্ড দেখায় পরের ম্যাচে কোচ ব্রুজন ডাগআউটে থাকতে পারবে কিনা তা অনিশ্চিত। থাকতে পারবেন কি পারবেন এ সিদ্ধান্ত নিবে ডিসিপ্লিন কমিটি। এমনটাই জানালেন রক্সি, ‘ব্রুজন পরের ম্যাচে থাকবেন কি থাকবেন না তা পরে জানা যাবে। এই সিদ্ধান্ত দেবেন ডিসিপ্লিন কমিটি। ’
কোচ ব্রুজেন কেন মাঠে ঢুকে পড়েছিল এর কারণ হিসেবে রক্সি বলেন, ‘বখতিয়ারকে পেছন থেকে ট্যাকল করছিল তারা। বারবার মারছিল এবং দেনিয়েলকেও আঘাত করছিল। পেছন থেকে ট্যাকল করলে তা সমস্যা। ভাল প্লেয়ারকে রক্ষা করার জন্য রেফারি। রেফারিকে তৈরি করা হয়েছে সেরা খেলোয়াড়কে প্রোটেক্ট করার জন্য, ট্যাকল করলে কার্ড দেওয়ার জন্য। রেফারি কার্ড তো দেয়নি উল্টো ফাউলও দিচ্ছিল না। তখন কোচ (ব্রুজন) তো তাকে (বখতিয়ার) সেভ করতে যাবে কারণ সে আমাদের সেরা খেলোয়াড়। বেস্ট খেলোয়াড়কে রক্ষা করা কোচের দায়িত্ব। কেননা পরে আমাদের পরে আরেকটা ম্যাচ আছে। কোচ হিসেবে এখানে আমি থাকলেও তাই করতাম। এখানে আমার দায়িত্ব আমার খেলোয়াড়কে বাঁচানো। তবে তার মেজাজ ধরে রাখার দরকার ছিল। এতে দলেরই মঙ্গল হয়। ’
এক সময় প্রধান কোচ ব্রুজন ওঠে যাওয়া ডাগআউটের দায়িত্ব নিতে হয় রক্সিকে। এমন একটি উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচে নিজের চ্যালেঞ্জ নিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা তেমন কিছু না। ব্রুজন ছিল না। কিন্তু আমাদের কৌশল সবসময় এক থাকে। মাঝেমধ্যে হয়তো কিছু উপদেশ ডাগআউট থেকে যায়। তবে তা তেমন কিছু না। ’
বাংলাদেশ সময়: ২৩০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৯
ইউবি/ওএইচ/