ঢাকা: দেশের সব শ্রেণির মানুষের চিকিৎসার বড় ভরসাস্থল ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল। এখানে সবসময়ই রোগীর চাপ থাকে।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে ঢামেকের জরুরি বিভাগে আনুমানিক ২০ মিনিট কোনো ট্রলি খুঁজে পাচ্ছিলেন না চিকিৎসার জন্য আসা কয়েকজন রোগীর স্বজন। ট্রলি না পেয়ে কয়েকজন আত্মীয়কে তাদের মুমূর্ষু রোগীকে কোলে নিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রবেশ করতে দেখা যায়।
গাইনি রোগী সুমি আক্তারকে (২৫) একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে গাজীপুরের টঙ্গী থেকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন স্বজনরা। হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে নিয়ম অনুযায়ী রোগীর নাম দিয়ে টিকিট কাটলেও ট্রলি না পেয়ে জরুরি বিভাগের সামনেই অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে থাকা রোগী নিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায় তাদের। এভাবে এক-দুই মিনিট করতে করতে ২০ মিনিট পার হয়ে যায়। অবশেষে একটি ট্রলি এলে সেটিতে রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে ঢোকেন স্বজনরা।
এ সময় রোগীর এক নারী আত্মীয় বলতে থাকেন, ২০ মিনিট অপেক্ষার পরে ট্রলি পেলাম, এভাবে হলে তো তাৎক্ষণিক চিকিৎসা থেকে রোগী বঞ্চিত হয়।
ওই সময় দেখা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত দুই ব্যক্তিকে একটি পিকআপ ভ্যানে ঢামেকের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন লোকজন। এদের মধ্যে একজনের মুখ দিয়ে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। অপরজন একদম অচেতন ছিলেন।
তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি বিভাগের ট্রলি না পেয়ে পিকআপ ভ্যানেই গুরুতর আহত দুই রোগী নিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায় লোকজনকে। এক পর্যায়ে ট্রলি না পেয়ে দুজন ব্যক্তি ওই রোগীদের কোলে নিয়ে হাসপাতালে ঢোকেন।
সে সময় পিকআপ ভ্যানটির সামনে উপস্থিত ছিলেন ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া।
ট্রলির জন্য রোগীদের অপেক্ষার বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার মো. রিয়াজ বাংলানিউজকে জানান, হাসপাতালে জরুরি বিভাগে রোগী বহন করা ট্রলির কোনো সংকট নেই। সংকট জনবলের। প্রতি শিফটে দৈনিক মজুরিতে ১০ থেকে ১২ জন ডিউটি করেন। ট্রলি আছে ৩০টা। এমনও দেখা গেছে, ১২ জনই ১২টা ট্রলি নিয়ে আলাদা আলাদাভাবে রোগী নিয়ে ব্যস্ত হাসপাতালে। এছাড়া বাকি ট্রলিগুলো রোগীর লোকজনই নিয়ে যান, পরে সেগুলো খুঁজে আনতে সময় লাগে। এ কারণে জরুরি বিভাগের সামনে ট্রলি থাকে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা মাঝে মাঝে ট্রলি ঠেলে থাকেন।
এ ব্যাপারে নতুন দায়িত্ব নেওয়া ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, আরও নতুন ২০টি ট্রলি জরুরি বিভাগে দেওয়া হবে। এছাড়া জরুরি বিভাগে কোনো স্পেশাল ট্রলিম্যান আর রাখা হচ্ছে না। সবাইকে বের করে দেওয়া হয়েছে। কারণ তারা ট্রলিতে রোগীদের বহনের নামে টাকা আদায় করে থাকেন। তারা কোনো বেতনভুক্ত কর্মচারী নন। পাশাপাশি জরুরি বিভাগে জনবল বাড়াতে হাসপাতালের অন্য স্থানে ডিউটিরত দৈনিক মজুরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত বেশ কয়েকজনকে ট্রলিতে রোগী বহনের দায়িত্ব দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২৪
এজেডএস/এইচএ/