ঢাকা: রাজধানীর বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়িয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সরকারি এই সংস্থাটি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তায় ২ লাখ টাকা দিয়েছে।
রোববার (৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ও বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির কাছে এই অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ. এইচ. এম সফিকুজ্জান।
সংস্থাটি তাদের সদর দপ্তরে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতন, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের অনুদান এবং অধিদপ্তরের এবারের ইফতার আয়োজন বাতিল করে মোট ২ লাখ টাকা অনুদান দেয়।
চেক হস্তান্তর শেষে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ডিজি এ. এইচ. এম সফিকুজ্জামান বলেন, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করতে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। আমরা আমাদের সদর দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীতের একদিনের বেতন ও অ্যাসোসিয়েশনের অনুদান ও ইফতারের খরচের ২ লাখ টাকা মালিক সমিতির হাতে তুলে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের তদারকি অভিযানের কারণে অনেক ব্যবসায়ী মনে করেন আমরা তাদের বিরুদ্ধে। আমরা যে তাদের পাশে আছি সেটি বোঝানোর জন্য আমাদের এই প্রতীকী অংশগ্রহণ।
এ সময় তিনি সমাজের সামর্থ্যবানদের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মতো অনেকে বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন উল্লেখ করে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। আশাকরি সবার নিরলস প্রচেষ্টায় বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা আবার ঘুরে দাঁড়াবেন।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তার জন্য আমার এবং বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষরে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। আইএফআইসি ব্যাংকের ওই অ্যাকাউন্টের নাম ‘বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত সহায়তা তহবিল’। অ্যাকাউন্ট নাম্বর হলো- ০২০০০৯৪০৬৬০৩১। যারা সহায়তা পাঠাতে চান, এই নম্বরে ব্যাংকের মাধ্যমে বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারবেন।
এ সময় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারসহ অধিদপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তারা, বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. নাজমুল হুদা, সাধারণ সম্পাদক মো. জহিরুল ইসলামসহ সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তায় তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীরা ২০ লাখ টাকা, উত্তরা এলাকার হিজড়াদের সরদারনী আলেয়া হিজড়া ২ লাখ টাকা, কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য ১০ লাখ টাকা, কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতি ১০ লাখ টাকা, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র ৫ লাখ টাকা ও প্যানেল মেয়র এক লাখ টাকা দিয়েছেন।
এছাড়া ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এক কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজারে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। সকাল ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ৪১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। এরপর ৪৩টি ইউনিট যাওয়ার খবর জানায় ফায়ার সার্ভিস। পরে ৪৮টি ইউনিটের প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা চেষ্টায় দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর শুক্রবার (৭ এপ্রিল) সকালে আগুন সম্পূর্ণভাবে নির্বাপনের ঘোষণা দেয় ফায়ার সার্ভিস।
আগুনে বঙ্গবাজার এলাকার মোট সাতটি মার্কেট পুড়ে গেছে। এর মধ্যে চারটি পুরোপুরি ও তিনটি আংশিক। মার্কেটগুলো হলো- বঙ্গ ইসলামীয়া মার্কেট, বঙ্গ হোমিও কমপ্লেক্স, বঙ্গবাজার মার্কেট, এনেক্সকো টাওয়ার, মহানগর শপিং কমপ্লেক্স, আদর্শ মার্কেট, গুলিস্তান মার্কেট।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২৩
এসসি/এমএমজেড