ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শেষ মুহূর্তে বেড়েছে যাত্রীর চাপ, অল্প দূরত্বে বাড়তি ভাড়া

নিশাত বিজয়, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৩
শেষ মুহূর্তে বেড়েছে যাত্রীর চাপ, অল্প দূরত্বে বাড়তি ভাড়া

ঢাকা: দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। আর টার্মিনালে বাড়ছে ঘরমুখো মানুষের ভিড়।

আগাম যারা টিকেট কেটেছেন বা দূর যাত্রার যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে না হলেও বিপাকে পড়েছেন স্বল্প দূরত্বের যাত্রীরা।

অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার কৌশল বদলে ফেলেছেন পরিবহন মালিকরা। শেষ গন্তব্য পর্যন্ত ভাড়া দিতে হবে এমন নিয়ম জারি করেই বেশি ভাড়া নিচ্ছে রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি।

বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) ঢাকার মহাখালী, সায়েদাবাদ ও গুলিস্থানের কাউন্টার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এছাড়া অনেক রূটে টিকিট না পেয়ে যারা লোকাল পরিবহন ব্যবহার করে যাচ্ছেন তাদের দিতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে সেলফি পরিবহন পাটুরিয়া পর্যন্ত যাত্রীপ্রতি ভাড়া নিচ্ছে ৩০০ টাকা। ঢাকার লোকাল পরিবহন- মৌমিতা, রবরব, ওয়েলকাম ও শুকতারা পরিবহনের কিছু বাসও বাড়তি ভাড়া রাখছে।

গাবতলী থেকে পাটুরিয়াগামী যাত্রী আশিকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ফরিদপুরে যাবো, এজন্য পাটুরিয়ায় গিয়ে ঘাট পার হবো। কিন্তু সাধারণ সময়ে ১৫০ টাকার ভাড়া ৩০০ টাকা চাচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া নিলেও বাধ্য হয়েই যেতে হচ্ছে।

ঢাকা থেকে যারা অধিক দূরত্বের পথ, বিশেষ করে পরিবহনগুলোর শেষ গন্তব্যে যাচ্ছেন না তাদেরও পুরে পথের ভাড়া দিতে হচ্ছে।  
গোপালগঞ্জের যাত্রীদের থেকে এ রূটের শেষ গন্তব্য খুলনা ও পিরোজপুরের ভাড়া আদায় করে নিচ্ছে বিআরটিসি। বিআরটিসি এ রূটের মতো অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে ফরিদপুর, যশোর ও ভাঙ্গার যাত্রীদের থেকেও।

এতে ঢাকা-ভাঙ্গা-ফরিদপুরের ভাড়া ২৮৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ ফরিদপুর থেকে ঢাকার ভাড়া ৩৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে ঢাকা-পদ্মা সেতু-খুলনার যানবাহনগুলোর ভাড়া বিআরটিএ ৫৩৭ টাকা নির্ধারণ করলেও বিআরটিসি ভাড়া নিচ্ছে ৬০০ টাকা।

ভাড়ার এমন বৈষম্যের পরও যাত্রীদের কোনো অভিযোগ পায়নি বলে দাবি বাংলাদেশে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ)।

বিআরটিয়ের উপ-পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) হেমায়েত উদ্দিন কিছু অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, অভিযোগগুলো যুক্তিহীন, কারণ খুলনায় শেষ গন্তব্য হলে আর কেউ গোপালগঞ্জ নামলে তাকে খুলনার ভাড়াই দিতে হবে। এটা আগে থেকেই বাস মালিকেরা কার্যকর করেছে।

তবে শেষ গন্তব্যের নামে ভাড়া আদায়কে তিনি যুক্তিহীন বলেছেন।

আর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ করপোরেশন (বিআরটিসি) জেনারেল ম্যানেজার (হিসাব) আমজাদ হোসেন বলেন, যাত্রীদের মাঝপথে নামালে তো রাস্তা থেকে যাত্রী পাবে না। চট্টগ্রামের বাসে যদি কেউ কুমিল্লায় যায়, তাহলে তো কুমিল্লার ভাড়া নেওয়া সম্ভব নয়। সেজন্য যেখানে শেষ স্পট সেখানের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

মহাখালী ও গাবতলী থেকে উত্তরবঙ্গের রূটে নন-এসি বাসে স্বল্প দূরত্বে যেমন ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। তেমনি বাড়তি ভাড়া আদায় হচ্ছে এসি পরিবহনে। বিশেষ করে এসি পরিবহনে ঈদ এলেই বাড়িয়ে দেওয়া হয় হয় বাসের ভাড়া।

যশোর-খুলনা-সাতক্ষীরা রূটে চলাচলকারী সোহাগ, একে ট্রাভেলস, হানিফ, সাতক্ষীরা এক্সপ্রেসসহ একাধিক এসি বাসে ভাড়া অন্য সময়ে ৮০০- ১১০০ টাকা। এ প্রতিবেদক টিকিট নিতে গিয়ে কাউন্টারগুলো ঘুরে দেখেন ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা করে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

সোহাগ পরিবহনের কাউন্টারে কর্মরত টিকিট টেকার বলেন, ঈদের সময় আসতে হয় ফাঁকা এজন্য ভাড়া সমন্বয় করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ করপোরেশন (বিআরটিসি) জেনারেল ম্যানেজার (হিসাব) আমজাদ হোসেনকে এসি বাসের ভাড়া কিভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে সে সম্পর্কে জিজ্ঞিস করলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩, এপ্রিল ২০, ২০২২
এনবি/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।