ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ পৌষ ১৪৩১, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সুন্দরবনে ৩ জেলে অপহরণ, চাওয়া হলো মুক্তিপণ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪
সুন্দরবনে ৩ জেলে অপহরণ, চাওয়া হলো মুক্তিপণ ফাইল ছবি

সাতক্ষীরা: পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে কাঁকড়া শিকারকালে তিন জেলেকে অপহরণ করেছে বনদস্যুরা।

মুক্তিপণের দাবিতে সুন্দরবনের মাইশার কোল ও ফিরিঙ্গি নদীর মোল্যাখালী খাল থেকে সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সাত সদস্যের একটি বনদস্যু দল তাদের অপহরণ করে।

 

অপহৃত জেলেরা হলেন- সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার হরিনগর গ্রামের নাজির সরদারের ছেলে রেজাউল ইসলাম (৩৮), গোলাম মোস্তফার ছেলে সুজন গাজী (২৭) ও খুলনার কয়রা উপজেলার দোসালী গ্রামের শেরআলী মোল্যা ওরফে কবিরাজের ছেলে এমদাদুল হক (৩৩)।

অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে অপহৃত জেলেদের সহযোগী জেলেরা মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) লোকালয়ে ফিরে এসে জানান, সাতক্ষীরা রেঞ্জের কদমতলা ও কোবাদক স্টেশন থেকে পাস (অনুমতিপত্র) নিয়ে গত শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) তারা একত্রে সুন্দরবনে প্রবেশ করেন। একপর্যায়ে সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে কাঁকড়া শিকারের সময় সোমবার বিকেল ও সন্ধ্যায় তিনটি পৃথক স্থান হতে তাদের তিন সহযোগীকে সশস্ত্র সাত দস্যু অপহরণ করে নিয়ে যায়।

পরবর্তীতে জিম্মি জেলেদের পরিবারের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে তারা মুক্তিপণের পরিমাণ জানাবে বলেও জানান তারা।

এদিকে গত সপ্তাহে মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসা জেলে ইয়াজুল ইসলাম ও ফয়সাল হোসেন জানান, প্রায় দুমাস আগে মজনু তিন সহযোগীসহ দুটি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে পশ্চিম সুন্দরবনে দস্যুতা শুরু করেন। পরে আলিম, মিলন পাটোয়ারী ও রবিউল চারটি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে পশ্চিম সুন্দরবনের পূর্ব প্রান্তে দস্যুতা শুরু করে। সম্প্রতি এই দুই বাহিনী সংঘবদ্ধ হয়ে গোটা পশ্চিম সুন্দরবন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।  

জেলেরা আরও জানান, ২০১৬ ও ২০১৮ সালে দুর্ধর্ষ এই তিন বাহিনীর ১১ জনের বেশি সদস্য অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিল। তবে ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর তারা আবারও সুন্দরবনে দস্যুতায় লিপ্ত হয়েছে। বনদস্যু দলটি বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মাধ্যমে মুক্তিপণের টাকা আদায় করছে বলেও ভুক্তভোগী জেলেরা নিশ্চিত করেন।  

এসব বিষয়ে সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. মশিউর রহমান জানান, প্রায় প্রতিদিন কম বেশি জেলে বনদস্যুদের হাতে জিম্মি হয়ে মুক্তিপণ দিয়ে বাড়িতে ফিরছেন। বনবিভাগের পর্যাপ্ত জনবলসহ আধুনিক অস্ত্রপাতি না থাকায় অভিযান পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না।  

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবীর মোল্লা জানান, কোনো জেলেকে অপহরণের বিষয়ে পুলিশকে কেউ অবহিত করেনি। তবে বনদস্যুদের তৎপরতার বিষয়ে কিছুদিন ধরে সাংবাদিকদের মাধ্যমে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।