ঢাকা, রবিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩২, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের পক্ষে সব দল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:২৬, অক্টোবর ৫, ২০২৫
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের পক্ষে সব দল

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের পক্ষে বিএনপি-জামায়াতসহ সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

রোববার (০৫ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চতুর্থ দিনের আলোচনা শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এক ধরনের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আজকে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ব্যাপারে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের জন্য জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, তাদের সম্মতির জন্য একটি গণভোট অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। এটি প্রথম ধাপ হিসেবে আমরা মনে করছি।

তিনি বলেন, বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের এটি একটি বড় রকমের অর্জন, বড় রকমের পদক্ষেপ এবং এটি প্রথম পদক্ষেপ। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী অন্যান্য বিষয়গুলোতেও আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই ঐকমত্য গড়ে তুলতে পারব।

ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে যে আইন সভা তৈরি হবে, সেই সভা যেন মৌলিক সাংবিধানিক সংস্কারগুলো করতে পারে, তাকে টেকসই করতে পারে তার জন্য সেই আইন সভাকে এমনভাবে চিহ্নিত করা দরকার বা আলাদা বৈশিষ্ট দেওয়া দরকার, যাতে করে এই সংস্কারগুলোকে জুলাই সনদের ভিত্তিতে যেসকল সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন, পরিবর্তন ও পরিমার্জন হবে, সেগুলো যেন টেকসই হয়। এই ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কার্যত একটি ঐকমত্য হয়েছে। আমরা আশা করছি, বিস্তারিত বিষয়গুলো আমরা আগামী দিনের বৈঠকগুলোতে অর্জন করতে পারব।

আলী রীয়াজ বলেন, ইতিপূর্বে বিদ্যমান সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়ার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। এখন অধিকাংশ দলই এরকম মত দিচ্ছে যে, ১০৬ অনুচ্ছেদের আওতায় সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়ার প্রয়োজন নাও হতে পারে। এই প্রসঙ্গে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই, এই কারণে দলগত অবস্থান থেকে অনেকেই অনেকটা সরে এসে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি বিশেষ করে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যেন সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তার জন্য তারা সচেষ্ট হয়েছেন এবং বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন করেছেন।

রাজনৈতিক দলগুলোর এই প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে খুব শিগগিরই সুনির্দিষ্টভাবে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে একটি সুপারিশ তৈরি করে ঐকমত্য কমিশন সরকারের কাছে দিতে পারবে আশা প্রকাশ করে আলী রীয়াজ বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি ১৫ অক্টোবরের পর ঐকমত্য কমিশনের কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে করছি না।

আলোচনায় যুক্ত ৩০টি দলের সনদে স্বাক্ষরের জন্য প্রতিনিধিদের নাম পাঠানোর বিষয়ে তিনি জানান, জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার বিষয়ে তিন-চতুর্থাংশ দলের কাছে নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। অনেকে নাম দিয়েছেন, অনেকে এখনও দেননি। দ্রুত নাম দিতে তিনি দলগুলোকে অনুরোধ করেন।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রোববারের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি-সহ ২৮টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

ব্রিফিংকালে কমিশনের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

আগামী ৮ অক্টোবর বিকেল ২টায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবার বৈঠকে বসবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

এমইউএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।