ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কেরানীগঞ্জ ডকইয়ার্ডে নির্মিত ২ ফেরি হস্তান্তর এপ্রিলের মধ্যে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২০
কেরানীগঞ্জ ডকইয়ার্ডে নির্মিত  ২ ফেরি হস্তান্তর এপ্রিলের মধ্যে ছবি: বাদল

ঢাকা: কেরানীগঞ্জে হাইস্পিড শিপবিল্ডিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের ডকইয়ার্ডে বিআইডব্লিউটিসি নির্মিত দু’টি ফেরি আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে হস্তান্তর করবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।  

তিনি বলেন, কুঞ্জলতা ও কদম নামে ফেরি দু’টির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

করোনার জন্য একটি ফেরি আমরা এপ্রিলের আগে পাবো। আর অপরটি এপ্রিলের মধ্যে পেয়ে যাবো।  

মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) কেরানীগঞ্জে বিআইডব্লিউটিসির কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে তিনি একথা বলেন।  

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের অনেক পুরাতন একটি শিপইয়ার্ড হলো হাইস্পিড শিপবিল্ডিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড। এখানে বিআইডব্লিউটিসির কুঞ্জলতা ও কদম- দু’টি ফেরি তৈরি হচ্ছে। আজ আমরা তাদের শিপইয়ার্ডটিতে নির্মিত ফেরি পরিদর্শন করলাম। তারা মানের ক্ষেত্রে কখনো কম্প্রোমাইজ করে না। এজন্য তাদের সুনামও রয়েছে দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।  

তিনি বলেন, আমাদের যে দু’টি ফেরির নির্মাণকাজ চলমান তাতে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা যথাসময়ে ফেরিগুলো হাতে পাবো এবং আগের যে সব ফেরি চলাচল করছে তা থেকে অনেক বেশি সুবিধাসহ অনেক বেশি আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। ব্রেস্টফিডিং ব্যবস্থাসহ প্রতিবন্ধীদের জন্য টয়লেটের সুব্যস্থা থাকছে। আমি মনে করি এই ফেরি যখন যাত্রীসেবা শুরু করবে তখন এটা যাত্রীবান্ধব হবে।  

কবে নাগাদ হস্তান্তর করা হবে ও এতে কতো টাকা ব্যয় হচ্ছে জানতে চাইলে খালিদ মাহমুদ বলেন, আগামী বছরের এপ্রিলে দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে কোভিড-১৯ এর জন্য দীর্ঘ একটা সময় গেছে। এখনও কোভিডের মধ্যে আছি। তারপরও জীবন-জীবিকার স্বার্থে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা মাঠে আছি। সেক্ষেত্রে একটি হয়তো আমরা আগেই পেয়ে যাবো। তার পরপরই আমরা আরো একটি পেয়ে যাবো। এই ফেরি দু’টি নির্মাণে ২১ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।  

কোন রুটে চলাচল করবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিআইডব্লিউটিসি যখন হস্তান্তর করবে তখন আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে পদ্মাসেতুর সঙ্গে যুক্ত রাখতে চাই। পদ্মাসেতু হয়ে গেলে পরে আমরা চিন্তা-ভাবনা করবো পরবর্তীতে এটা কোথায় সংযোজন করা যায়।  

শিপবিল্ডার্সের চ্যালেঞ্জগুলো কী বলে মনে করছেন জানতে চাইলে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিপবিল্ডার্স খাতে নতুন করে একটা বাজার তৈরি হয়েছে। তাই আমরা জাতীয়ভাবে না, আন্তর্জাতিকভাবেও এই শিল্পখাতে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান নিয়ে থাকতে চাই। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি। এক্ষেত্রে আইএমওর যে সব নির্দেশনা আছে সেগুলো দ্রুত বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করতে পারি সেভাবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের কথাবার্তা চলছে। আমরা যেহেতু হংকং কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছি আমরা আশা করছি যথা সময়ের আগেই নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করতে পারবো।  

করোনাকালে শিপবিল্ডার্স খাতে কোনো প্রণোদনা দেওয়ার চিন্তাভাবনা সরকারের আছে কিনা জানতে চাইলে খালিদ মাহমুদ বলেন, আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো প্রস্তাবনা আসেনি। বরং আমরা চেয়েছি বর্তমান সরকার ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিতে চায়।  

এসময় নৌপরিবহন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব ভোলা নাথ দে, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান খাজা মিয়া, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক, হাইস্পিড শিপবিল্ডিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারজানা রহমানসহ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটিসি, বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  

প্রকল্প সূত্র জানা যায়, ২০১৯ সালের ৩০ জুনে প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে। কুঞ্জলতা ও কদম নামে ফেরি দু’টির নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে।

ফেরির দৈর্ঘ্য ৪২ দশমিক ৭০ মিটার, প্রশস্ত ১২ দশমিক ২০ মিটার, উচ্চতা ২ দশমিক ৫০ মিটার, ড্রাফটস ১ দশমিক ৪০ মিটার, গতি ঘণ্টায় ১০ নটিক্যাল মাইল, কার্গো ২৫০ টন, যানবাহন ১২টি ২৫ টন ওজনের ট্রাক, যাত্রী একশ জন, অফিসার ও অপারেশনাল ক্রু ১৬ জন। প্রতিটি ফেরি নির্মাণে ১০ কোটি ৭১ লাখ ২১ হাজার টাকা করে মোট ২১ কোটি ৪২ লাখ ৪২ হাজার টাকা খরচ করা হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ ধরা রয়েছে ২৪ কোটি ৯৫ লাখ ২৬ হাজার টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২০ 
জিসিজি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।