ঢাকা: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জোর করে কিংবা বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় আসে না। বরং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনে জয়ী হয়ে রাষ্ট্র দায়িত্ব গ্রহণ করে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটের সামনে আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করতে এ সভার আয়োজন করা হয়।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতায় আসে না। বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় আসে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতায় আসে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করে৷ আমরা যা বলি, তা আমরা করি।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনাকে এদেশের মানুষ ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছিলেন। ২০০১ সালে শেখ হাসিনা একদিনও বেশি থাকেননি, ক্ষমতা হস্তান্তর করে বাড়ি ফিরে গেছেন।
নানক বলেন, আমি একটি কথা বলতে চাই, দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন আমরা কেউ না। এ কৃষি মার্কেটে আগুন লেগেছে, আশপাশে গরম লাগেনি? দেশে যদি অশান্তি সৃষ্টি হয়, আমরা কেউ শান্তিতে থাকতে পারব না।
বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজকে বলছেন, তিনি হুমকি দিয়েছেন, কিসের হুমকী দেন? বলেন, গোলমালের কিছু দেখেননি। সংঘাতের দিকে যাবে। এখন তো সংঘাত শুরু হয়নি।
নানক বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, নির্বাচন হবে। জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে।
বিএনপি মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম যদি সংঘাত সৃষ্টি করেন, সংঘাতের দিকে এগিয়ে যান, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করেন, আমার উন্নয়নের পথে যদি বাধা সৃষ্টি করেন, আমার অগ্রগতির পথে যদি বাধা সৃষ্টি করেন, মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন যদি অস্বাভাবিক করেন, তাহলে যে হাতে বোমা মারবেন, সে হাত ভেঙে দেওয়া হবে। যে হাতে আগুন দেবেন, সে হাত পুড়িয়ে দেওয়া হবে।
ভোটারদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এ সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে উন্নয়ন হয়।
কৃষি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের সময় জাহাঙ্গীর কবির নানক পবিত্র মক্কায় অবস্থান করছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, গত ১৪ তারিখ দিনগত রাতে কৃষি মার্কেটে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়৷ এতে আমাদের দোকানদার ভাইরা সর্বস্ব হারিয়ে ফেলেন।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটকে 'মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের প্রাণের মার্কেট' আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, সে দিন এ বার্তা পাওয়ার পর আমি ফায়ার সার্ভিসের ডিজির সঙ্গে, তেজগাঁও জোনের ডিসি, মোহাম্মদপুর থানার ওসির সঙ্গে কথা বলি। এ মার্কেট কমিটির সভাপতি সলিমুল্লাহ সলু ভেইয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি।
তিনি বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই, এ পার্শ্ববর্তী এলাকার উর্দুবাসীদের প্রতি। তারা এ কৃষি মার্কেটে দুর্ঘটনা ঘটনার পর তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই পুলিশ ভাইদের প্রতি।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আগুনে পুড়ে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে আপনাদের। আমরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, যুব মহিলা লীগ আপনাদের পাশে ছিল, পাশে আছি এবং পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ৷
তিনি বলেন, দোকানদার ভাইরা, আপনাদের আশ্বস্ত করার, সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমার জানা নেই। আমি পবিত্র ওমরাহ পালন করে আপনাদের কাছে ছুটে এসেছিলাম। আমার কানে অনেক কথা এসেছিল। আমি সেদিনও আপনাদের বলেছিলাম, আমার ১৭তলা, ১৯ তলা ভবন দরকার নেই। এখানে যে শেড ছিল, সেই শেড করেই মার্কেট চালু করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রের সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানান আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এ সদস্য৷
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ সলিমুল্লাহ সলুর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে ঢাকা-১৩ আসনের সংসদ সদস্য সাদেক খান, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সভাপতি আলেয়া সারোয়ার ডেইজি, ৩৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসিফ আহমেদসহ আদাবর ও শেরে বাংলা নগর থানার বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভোরে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে৷ এতে ২১৭টি দোকান পুড়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হন চার শতাধিক ব্যবসায়ী।
অগ্নিকাণ্ডের পর মার্কেটটি ভেঙে বহুতল মার্কেট তৈরির একটি গুঞ্জন ওঠে। এতে আপত্তি তোলেন ব্যবসায়ীরা। পরে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ঢাকা-১৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ঘটনাস্থল পরিদর্শক করেন।
এ সময় তিনি জানান, কোনো বহুতল মার্কেট হবে না। ব্যবসায়ীরা দ্রুত সময়ে তাদের ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩
এনবি/জেএইচ