রংপুর: উজানে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। এর প্রভাবে রংপুরের গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ পানি বাড়তে শুরু করায় অনেকেই গবাদি পশু ও ঘরের জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাননি। চরাঞ্চলের অনেক জায়গায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুর ১২টায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানির প্রবাহ ছিল ২০ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার, যেখানে বিপৎসীমা ধরা হয়েছে ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার। একই সময়ে ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ ছিল ৫২ সেন্টিমিটার, যার বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইস গেট খুলে দিয়েছে পাউবো এবং অববাহিকায় জারি করা হয়েছে লাল সংকেত।
গঙ্গাচড়ার নোহালি, আলমবিদিতর, কোলকোন্দ, লক্ষ্মীটারী, গজঘণ্টা ও মর্নেয়া ইউনিয়নের পাশাপাশি কাউনিয়ার টেপামধুপুর ও বালাপাড়া ইউনিয়ন এবং পীরগাছার ছাওলা ও তাম্বুলপুর ইউনিয়নের অনেক এলাকাই প্লাবিত হয়েছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে সহস্রাধিক পরিবার।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া তথ্যমতে, নোহালী ইউনিয়নে প্রায় ২৫০ পরিবার; আলমবিদিতর ইউনিয়নে প্রায় ৫০ পরিবার; কোলকোন্দ ইউনিয়নে প্রায় ২০০ পরিবার; লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নে প্রায় ৩০০ পরিবার; গজঘণ্টা ইউনিয়নে প্রায় ১০০ পরিবার ও মর্নেয়া ইউনিয়নে প্রায় ১৫০ পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
নোহালি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আশরাফ আলী বলেন, চরাঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ও আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকা পানিতে ডুবে গেছে।
কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়নের একাধিক গ্রামের মানুষ এখন চরম দুর্ভোগে রয়েছেন।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, সাম্প্রতিক বন্যায় তিস্তার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দিতে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সজিবুল করিম বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলছে। তালিকা চূড়ান্ত হলে সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে।
এদিকে, পাউবো ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাতে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল। এখন কিছুটা কমলেও পরিস্থিতি সতর্ক পর্যায়ে রয়েছে। নদীতীরবর্তী জনগণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
এসআরএস